চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক দুই সমন্বয়ক (বর্তমান এনসিপি নেতা) হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলার তেমন অগ্রগতি নেই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিলেও এর বাইরে নতুন কোনো হালনাগাদ নেই বলে জানিয়েছেন লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম।
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন ঘিরে সংঘর্ষে গত বছরের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। তার বাড়ি লোহাগাড়ার চুনতি ফারাঙ্গায়। সেখানে ২৭ নভেম্বর হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলমসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রায় ১৫ জন চট্টগ্রাম থেকে চুনতির ফারাঙ্গা এলাকায় যান। সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত শেষে ফেরার পথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে হাসনাত ও সারজিসের গাড়িতে ধাক্কা দেয় একটি ট্রাক। বৈষম্যবিরোধী নেতারা ট্রাকচাপা দিয়ে তাদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তোলেন। পরে সেই ট্রাকের চালক মুজিবর রহমান (৫২) ও তার ছেলে হেলপার মোহাম্মদ রিফাতকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনায় বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার সুগন্ধা আবাসিক এলাকার আহমেদ নেওয়াজ। ওই মামলায় এই দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ী এলাকায়।
লোহাগাড়া থানার ওসি মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, সড়ক পরিবহন আইনের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত সেই ট্রাকটি এখনো থানা হেফাজতে রয়েছে। শুনেছি তারা দুজনই জামিনে রয়েছেন। এর বেশি নতুন কোনো আপডেট নেই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লোহাগাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, শুনেছি ফেব্রুয়ারির দিকে তারা দুজন জামিনে বের হয়েছেন। এ ঘটনায় তাদের দুজনকে রিমান্ডে আনা হয়েছিল। সবকিছু তদন্ত করে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তবে থানার বাইরে থাকায় এই মুহূর্তে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, চট্টগ্রামে সেদিন ট্রাকটি গাড়িকে চাপা দেওয়ার পর আরও দুটি বাইককে চাপ দেয়। বাইক দুটি আমাদের ছিল। ট্রাকের চালক এবং হেলপারকে ধরে আমরা যখন জিজ্ঞেস করি গাড়িতে কেন চাপা দেওয়া হলো? তখন তারা বলতে থাকেন, চাপা দিয়েছি, কী করবেন? মারবেন? মেরে ফেলেন। জেলে দেবেন? দেন। এরপর তারা আটক হয়েছে শুনেছিলাম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কী হয়েছে, সেই খবর আর জানা নেই।
মন্তব্য করুন