সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। গতকাল রোববার বিকেলে লাঙ্গলের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে তিনি এই ইশতেহার ঘোষণা করেন।
ইশতেহার ঘোষণাকালে তিনি বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনকে সার্বজনীন এবং দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ। নগরের উন্নয়নে করপোরেশনের সঙ্গে নাগরিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। নগর উন্নয়নে স্থায়ী কমিটিগুলোর সঙ্গে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ নাগরিকদের সম্পৃক্ত করা হবে। বর্তমান যে নগর ভবন রয়েছে, এটিকে একটি বহুতল বাণিজ্যিক বা আবাসিক ভবন ছাড়া কিছুই মনে হয় না। ভবনটিতে কোনো স্থাপত্য ঐতিহ্য নেই। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে নগর ভবনকে আধুনিক ও ঐতিহ্যের মিশেলে একটি দৃষ্টিনন্দন নগর ভবনে রূপান্তর করব।
একটি পরিকল্পিত নগরের ক্যানভাস অনেক বড়। শুধু রাস্তাঘাট আর ড্রেন করলেই নগরটি পরিকল্পিত হয়ে উঠে না। সিলেট নগরের এখনো অনেক সমস্যা রয়েছে। যানজট, জলাবদ্ধতা ছাড়াও অনেক কিছু করার বাকি রয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে সিটি করপোরেশনের আয়তন অনেক বেড়েছে। ২৭টি ওয়ার্ড থেকে হয়েছে ৪২টি ওয়ার্ড। বর্ধিত এলাকায় অনেক সমস্যা রয়েছে। অনেক পিছিয়ে রয়েছে নতুন এলাকাগুলো। নগরবাসীর কাছে আমার আহ্বান, আপনারা যেন সবকিছু বিবেচনায় রেখে লাঙ্গল মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেন।
এ সময় বাবুল বলেন, আমি কথা দিচ্ছি, আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করলে সিলেটকে একটি আধুনিক মহানগর হিসেবে গড়ে তুলব। নগরবাসীর নিরাপত্তা, যোগাযোগের উপযোগী নতুন রাস্তা, ফুটপাত নির্মাণসহ যানজট নিরসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেব। সিলেটকে একটি নাগরিকবান্ধব, শিল্পবান্ধব, যানজটমুক্ত, পরিবেশবান্ধব, জলাবদ্ধতামুক্ত, সুপরিকল্পিত আবাসনের নগর হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেব। এলাকার উন্নয়ন ও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতে এ কমিটি কাজ করবে।
নগরের সেবামূলক খাতগুলোকে আরও শক্তিশালী করা হবে। সিলেট একটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভবন নির্মাণের অনুমতি প্রদানে যথাযথভাবে তৈরি করা হচ্ছে কি না, সেটা কঠোরভাবে নিশ্চিত করা হবে।
সিলেট নগরের একটি বড় সমস্যা—পানীয় জলের সমস্যা। এক বছর আগে বলা হয়েছিল সিলেট ওয়াসা গঠন করা হবে; কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোনো নাম-গন্ধই নেই। সুতরাং, ওয়াসার আশায় বসে থাকলে হবে না।
একাধিক কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হবে। যেখানে গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষার অভাবে নগরে কিশোর গ্যাং বাড়ছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তাদের পুনর্বাসন এবং কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে একটি আধুনিক পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হবে। পাশাপাশি নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠাগার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া ব্যক্তি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারগুলোকে সবধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ সিদ্দিকীসহ জেলা ও মহানগর নেতারা।
মন্তব্য করুন