ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার পৌর শহরের প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত বন্দর কুলিক নদীর বড় ব্রিজের সামনে মূল সড়কের দুই ধারে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। সেখানকার ময়লা পানিতে ভাসছে পলিথিনসহ নানা ধরনের বর্জ্য। এতে চারদিকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এতে অতিষ্ঠ পৌর বাজারের ব্যবসায়ীসহ ওই এলাকার বাসিন্দা ও চলাচল করা শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। বর্ষাকালে এ দুর্গন্ধ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায় স্থানটি ময়লা ফেলার জন্য নির্ধারিত জায়গা না হলেও পৌর শহরের সব ময়লা-আবর্জনা নিয়মিতই ফেলা হচ্ছে। বলার বা বাধা দেওয়ার যেন কেউ নেই। আবার মাঝেমধ্যেই ওইসব আবর্জনায় দেওয়া হয় আগুন। সে আগুনের ধোঁয়া পাশের মার্কেট ও বাসাবাড়িগুলোতে চলে যায়। ফলে ব্যবসায়ী, পথচারীসহ আশপাশের বাসাবাড়ির মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। দুই বছর ধরে এ সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন পৌরসভার অনেক বাসিন্দা। অপরিকল্পিত ও উন্মুক্তভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় এ রাস্তা দিয়ে চলাচল ও বসবাস করা দুরূহ হয়ে পড়ছে বলে জানান পথচারী ও স্থানীয়রা। ট্রাক্টর ও ট্যাঙ্ক-লরির সভাপতি মোকসেদ আলী অভিযোগ করেন, পৌরসভার এসব ময়লা-আবর্জনা এখানে ফেলাতে আমাদের প্রচণ্ড অসুবিধা হচ্ছে। দুর্গন্ধে ঠিকমতো কাস্টমার দোকানে আসতে চায় না। আবর্জনায় কুকুরের উৎপাত ও আগুন জ্বালিয়ে ধোঁয়ায় প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।
পৌর শহরের সাবেক কাউন্সিলর মো. শেফা ও অমর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ময়লার দুর্গন্ধ ও কুকুরের অত্যাচারে স্কুলে ঠিকমতো বাচ্চারা আসতে চায় না।
এ ব্যাপারে রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচএ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ চৌধুরী বলেন, আগুনের ধোঁয়া ও আবর্জনার গন্ধ থেকে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে। তাই এ ধরনের রোগের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে এই স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা দরকার। পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি ২০২১ সাল থেকে মেয়রের দায়িত্ব পেয়েছি। রানীশংকৈল পৌরসভার নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় ব্রিজের সামনের দুপাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ডাম্পিং স্টেশনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পৌরসভার জন্য প্রজেক্ট অনুমোদন হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে এ জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে না। অধিগ্রহণের অনুমতি পেলেই পৌরসভার সব ময়লা-আবর্জনা ওই ডাম্পিং স্টেশনে স্থানান্তরিত করা হবে।