তানজিম মাহমুদ, জবি
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৮ এএম
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
স্বজনের কান্না

পরিবারের হাল ধরা হলো না তামিমের

পরিবারের হাল ধরা হলো না তামিমের

ছেলের স্বপ্ন ছিল সরকারি চাকরি করবে, প্রতিষ্ঠিত হবে। আমার এই অসচ্ছল পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটাবে। ছেলের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আহসান হাবিব তামিমের বাবা আব্দুল মান্নান। গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘটিত সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তামিম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

তামিমের বাবা মোবাইল ফোনে বলেন, সেদিন ছিল শুক্রবার। দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা সবাই শুতে যাই। কিছুক্ষণ পর তামিম উঠে চলে গেল। কেউ ওকে ডেকেছিল, না নিজের ইচ্ছায় গিয়েছিল, জানি না। আমার ছেলেটা আর ফিরল না। ফোনে শুনলাম গুলি লেগেছে। হাসপাতালে যখন ওকে দেখতে পেলাম ততক্ষণে তামিম আর দুনিয়ায় নেই।

তামিমের বাবা মোটর মেকানিক। ঢাকায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে থাকতেন একটি ভাড়া বাসায়। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা তামিম স্বপ্ন দেখতেন পরিবারের জন্য কিছু করার। তিন ভাইয়ের মধ্যে তামিম ছিলেন দ্বিতীয়। বড় ভাইও বাবার সঙ্গে করতেন মেকানিকের কাজ। ছোট থেকেই মেধাবী আর সাহসী ছিলেন তামিম। তাদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলায়।

তামিমের বাবা বলেন, গ্রামে আমাদের নিজের বলতে একটি বাড়িও নেই। আমরা ঢাকাতেই থাকি। গ্রামে তেমন যাওয়া হয় না। ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলেটা বেশ চঞ্চল। অভাব অনটনে মানুষ। ওর ইচ্ছা ছিল তার ছোট ভাইটাকেও ভালো জায়গায় পড়াশোনা করাবে। তা আর হলো না। তামিম আর ঘরে ফিরে এলো না।

তামিমের বাবা ছেলে হারানোর শোক চেপে রাখতে পারলেও, পারছেন না তার মা। কেউ তামিমের কথা জিজ্ঞেস করলেই মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। শোকের মাতম বয়ে চলেছে তামিমের বন্ধু ও শিক্ষকদের মাঝেও। তামিমের বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, তার অকাল মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। বিভাগের পক্ষ থেকে তার পরিবারের পাশে থাকব আমরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. আল আমিন বলেন, আমরা তামিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের সহযোগিতা করার প্রচেষ্টা চলমান। বিভাগ ও প্রক্টরিয়াল বডি থেকে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সহযোগিতা করবে। এ ছাড়া হতাহত শিক্ষার্থীদের তালিকা হচ্ছে। তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, তামিমের পরিবারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। কথা বলেছি। গণিত বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। পাশাপাশি আহত শিক্ষার্থীদেরও খোঁজ নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফিফা কোয়ালিফায়ারে শেষবারের মতো নামছেন মেসি, জানালেন নিজেই

অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে রেখে স্বাস্থ্যকর্মীর টিকটক, অতঃপর...

গকসু নির্বাচন : রেকর্ডসংখ্যক মনোনয়ন বিতরণ 

চট্টগ্রামে হবে আইইসিসি মাল্টিডেস্টিনেশন এডুকেশন এক্সপো 

চব্বিশের বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ : কাদের সিদ্দিকী

ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে হামলার আশঙ্কা নিয়ে যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্যানেলে তন্বির জন্য পদ শূন্য রাখলেও একই পদে লড়ছেন বাগছাসের এক নেতা

বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ দুই ম্যাচের জন্য আর্জেন্টিনা দল ঘোষণা

আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক জোট

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ : এনামুল হক চৌধুরী

১০

জিপিএ ৫ পেয়েও দ্বিতীয় ধাপে কলেজ পায়নি ১৪১৮ জন

১১

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বড় রদবদল

১২

রাজশাহীর প্রবীণ সংবাদপত্র এজেন্ট হেকমত উল্লাহ মারা গেছেন

১৩

রোডম্যাপ কার্যকরের আগে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে : খেলাফত মজলিস

১৪

ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ

১৫

দ্বিতীয় ধাপে শিক্ষার্থী পায়নি ৪১৩ কলেজ

১৬

রাকসু নির্বাচন / ২৫ পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করল ছাত্রদল

১৭

মতবিনিময় সভা করেছেন মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী

১৮

কর্ণফুলী টানেলে ফের ৩ দিনের ট্র্যাফিক ডাইভারশন

১৯

তিন দলের সঙ্গে জামায়াতের বৈঠক

২০
X