মো. রুবেল মিয়া, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০২:৫২ এএম
আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৩৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

মেহেদীর মায়ের কান্না থামছে না

মেহেদীর মায়ের কান্না থামছে না

নিম্নবিত্ত পরিবারের একমাত্র ছেলে মো. মেহেদী। বাবা স্থানীয় একটি কারখানার তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতেন। মেহেদীকে ঘিরেই সব স্বপ্ন ছিল বাবা-মায়ের। ছেলেকে একজন ইঞ্জিনিয়ার বানাবেন সেই আশায় পরিবারের অসচ্ছলতার মধ্যেও স্থানীয় একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন। অসহায় বাবা-মার স্বপ্ন ছিল, একসময় ছেলে বড় ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মার নাম উজ্জ্বল করবে। তবে সেই স্বপ্ন গুলিতে শেষ হয়ে গেছে।

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা-মা। ছেলের কথা মনে পড়লেই বুকফাটা চাপা কান্না এবং চোখের পানিতে কাতর হয়ে পড়েন বাবা-মা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মো. মেহেদী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউচর গ্রামের মো. ছানাউল্লাহর ছেলে। তার পৈতৃক বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানার বড় রায়পাড়া। তবে সে তার পরিবারসহ জন্মের পর থেকে নানির বাড়িতে থাকত।

নিহত মো. মেহেদীর বাবা ছানাউল্লাহ বলেন, আমার ছেলে খুবই মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের ছিল। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে নিজেই সারা দিন টিউশনি করে পড়ালেখার খরচ আর সংসারের খরচ চালাত। আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। ২০ জুলাই সন্ধ্যার পরও সে বাড়ি না আসায় আমি তার মোবাইলে ফোন দিই। কয়েকবার রিং হওয়ার পর এক ছেলে ধরে জানায়, আমাদের মেহেদী আর নেই। নারায়ণগঞ্জের চিটাগাংরোডে পুলিশের গুলিতে সে নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি রাস্তায় পড়ে আছে আমার একমাত্র ছেলের নিথর দেহ। মাথায় গুলি লাগায় মজগগুলো সব বের হয়ে গেছে। পলিথিনে ভরে ছেলের নিথর দেহটিকে অনেক কষ্টে বাসায় নিয়ে আসি।

এদিকে মেহেদীর মায়ের কান্না এখনো থামছে না। ছেলের কথা মনে করে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি।

মেহেদীর মা শিল্পী বেগম ছেলের কলেজের আইডি কার্ড হাতে নিয়ে কান্নাকণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী একটি ছোট চাকরি করেন। অনেক স্বপ্ন ছিল, একমাত্র ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে। আমার ছেলেটা দেশের জন্য আন্দোলন করতে গিয়েছিল আমাদের না জানিয়ে। সবার সঙ্গে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে আমার বাবার মাথার মগজগুলো বের হয়ে গেছে। কেন মারল এমন করে আমার ছেলেকে? কী দোষ করেছিল।

নিহত মেহেদীর স্কুলশিক্ষক আবুল কাশেম জানান, ছোটবেলা থেকেই সে খুব শান্ত ও ভদ্র এবং মেধাবী একজন ছেলে ছিল। সে পঞ্চম শ্রেণিতে জিপিএ ৫ পেয়েছিল। অসহায় পরিবারটির একমাত্র ছেলে হয়েও সে পরিবারের চিন্তা না করে দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। যারা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের বিচারের দাবি ও এ অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘেরাও

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

‘ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে পিলখানার হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে শেখ হাসিনা’

শীত কখন জেঁকে বসতে পারে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

কেন প্রকাশ্যে কেঁদেছিলেন অক্ষয়?

আর্জেন্টিনায় গুনে গুনে ৭ গোল দিল ব্রাজিল

১৯ মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী মিল্টন গ্রেপ্তার

টিউলিপের ২ বছরের কারাদণ্ড, যা বলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে

স্বর্ণপদকজয়ী জাতীয় পর্যায়ের বডিবিল্ডারকে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরে ঝুট গোডাউনে আগুন

১০

ক্ষমতায় গেলে সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ গড়বে বিএনপি : ফখরুল

১১

বাড়ি ফেরা হলো না ফল ব্যবসায়ী মধুউল্লাহর

১২

বিভিন্ন থানায় পুলিশ টাকা ছাড়া কথা শোনে না : সারজিস

১৩

বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজের শিক্ষকদের

১৪

যে আসন থেকে নির্বাচন করতে চান রেজা কিবরিয়া

১৫

অস্তিত্ব সংকটে ষাটগম্বুজ মসজিদ, ক্ষয়ে গেছে ১০ মিহরাব

১৬

কম্পিউটার কেনার সময় যেসব বিষয় জানা জরুরি

১৭

রোহিত-কোহলির পরবর্তী বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে যা জানাল টিম ম‍্যানেজমেন্ট

১৮

দেশের আদালতে প্রথম কোনো ব্রিটিশ এমপির সাজা 

১৯

সেন্টমার্টিনগামী জাহাজকে জরিমানা

২০
X