‘গ্রিন পার্ক ক্রিকেট স্টেডিয়াম’—নামটা কানে বাজতেই চোখের সামনে সবুজে ঘেরা কোনো খেলার মাঠের দৃশ্য ভাসতে পারে। তবে বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। সবুজের আড়ালে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে এই মাঠের গ্যালারির একপাশ। আবার কিছু কিছু ফ্লাডলাইটে সমস্যা থাকায় স্টেডিয়ামের জরাজীর্ণতা আরও বেশি দৃশ্যমান হয়ে আছে। আগামীকাল এই মাঠেই ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি খেলতে নামবেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। প্রায় তিন বছর পর টেস্ট ম্যাচ পেলেও আয়োজনের জন্য খুব একটা প্রস্তুত মনে হয়নি গ্রিন পার্ককে। তার ওপর দর্শকদের জন্য ভয়ের কারণ হতে পারে গ্যালারির সি স্ট্যান্ডের একটি অংশ ঝুঁকিপূর্ণ!
২০২১ সালে সর্বশেষ এই মাঠে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল ভারত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা সে টেস্টের ফল হয়েছিল ড্র। এরপর এখানে আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখা যায়নি। এমনকি আইপিএলের মতো জমজমাটপূর্ণ টুর্নামেন্টের ম্যাচের দেখা নেই সাত বছর হলো। সবকিছু মিলিয়ে স্টেডিয়ামের সংস্কারও সেভাবে আর হয়ে ওঠেনি। অথচ এমন মাঠেই কি না ভারত-বাংলাদেশ খেলতে যাচ্ছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ!
বাংলাদেশ ম্যাচের আগে স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য খুব বেশি সময় নাকি পায়নি উত্তর প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। স্টেডিয়ামের
প্রেসবক্স পুরোটা খোলামেলা; নেই কোনো গ্লাস—নেই শীতলীকরণ ব্যবস্থাও। এক ভারতীয় সাংবাদিক তো বলেই বসলেন, ‘এখানে ল্যাপটপ রেখে বাইরে যাওয়াটা নিরাপদ হবে তো!’ স্টেডিয়ামের এমন জরাজীর্ণতার বর্ণনা মিলবে আরেকটি খবরে। পাবলিক ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্ট (পিডব্লিউডি) থেকে জানানো হয়েছিল, স্টেডিয়ামের সি স্ট্যান্ডের একটি অংশের ঝুঁকির কথা। শুরুতে ওই অংশের টিকিটও বিক্রি থেকে সরে এসেছিল তারা। পরে কিছুটা সংস্কার করে ৪ হাজার ৮০০ ধারণক্ষমতার জায়গায় ১ হাজার ৭০০ টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরও ঝুঁকির ভয়টা থেকেই যাচ্ছে। এর সঙ্গে আবার দর্শকদের জন্য বড় বিপত্তি হচ্ছে ম্যাচ টিকিটের মূল্য।
কানপুর টেস্টের টিকিটের মূল্য ৭০০ থেকে ১০ হাজার রুপি পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। তারপরও অনেকদিন পর কানপুরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরায় দর্শকদের মধ্যে একটা বাড়তি উত্তেজনাও দেখা গেছে। অনেকেই অনলাইনে টিকিট কাটার পর সরাসরি সংগ্রহের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। তাদের এমন প্রত্যাশাকে যেন ডুবিয়ে না দেয় স্টেডিয়ামের জরাজীর্ণতা, সেটাই হয়তো আশা করবে কর্তৃপক্ষ।