এবারও ঈদুল আজহায় দেশে উৎপাদিত পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মিটবে। কোরবানির জন্য দেশে ১ কোটি ২৫ লাখের বেশি পশু রয়েছে। আর চাহিদা রয়েছে ১ কোটির বেশি। ফলে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে গরু আমদানির প্রয়োজন হবে না। অবৈধ পথে গরু আনার বিষয়টি বন্ধে এরই মধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পশুর অবাধ পরিবহন নিশ্চিত করা-সংক্রান্ত বিষয়ে আজ বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। সভা থেকে নির্বিঘ্নে কোরবানি সম্পন্ন করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বিশেষ নির্দেশনা আসবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন কালবেলাকে বলেন, নির্বিঘ্নে কোরবানির কার্যক্রম শেষ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার (আজ) সকাল ১০টায় আন্তঃমন্ত্রণালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোরবানির যাবতীয় কার্যক্রম বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন, এ বছরও শতভাগ কোরবানি দেশের পশুতেই করা সম্ভব হবে। চাহিদার চেয়ে পশু বেশি রয়েছে।
ইফতেখার জানান, বৈজ্ঞানিক উপায়ে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ বিষয়ে সারা দেশে ৭২ হাজার ৫৬৩ খামারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ফলে খামার থেকে আসা গরু নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা জানান, পশু পরিবহনের সময় ব্যবসায়ীদের পথে পথে চাঁদাবাজির সম্মুখীন হতে হয়। ফলে ব্যবসায়ীরাও গরু-ছাগলের দাম বেশি চান। এ জন্য চাঁদাবাজি বন্ধে হাইওয়ে পুলিশকে বিশেষ নির্দেশনা দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্টেরয়েড বা হরমোন দিয়ে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ নিষিদ্ধ জানিয়ে কর্মকর্তারা আরও বলেন, হাটে কেউ এ ধরনের গরু-ছাগল বিক্রির জন্য আনলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিশেষ মেডিকেল টিম। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদার বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এ বছর আমরা দেশি পশুতেই কোরবানির চাহিদা মেটাতে পারব। ভারতীয় গরুর ওপর আর নির্ভর করতে হবে না। ভারত থেকে গরু আসবেও না। খামারিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেজন্য ব্যবস্থা নেবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
কোন বিভাগে কত পশু:
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন খামারে প্রায় ৭ লাখ ৪৭ হাজার, চট্টগ্রাম বিভাগে প্রায় ১৭ লাখ ৭৩ হাজার, রাজশাহী বিভাগে প্রায় ৪৪ লাখ ৭৮ হাজার, খুলনা বিভাগে প্রায় ১১ লাখ ৮২ হাজার, বরিশাল বিভাগে প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার, সিলেট বিভাগে প্রায় ২ লাখ ১২ হাজার, রংপুর বিভাগে প্রায় ১৫ লাখ ৫২ হাজার, ময়মনসিংহ বিভাগে প্রায় ৫ লাখ ৩৩ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এ ছাড়া গৃহপালিত প্রায় ১৬ লাখ ৪৩ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালে কোরবানিযোগ্য পশু ছিল ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি। এর মধ্যে ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি কোরবানি হয়েছিল। গত বছর কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত ছিল প্রায় ৭৫ লাখ। চলতি বছরও প্রায় ২০ লাখ পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন