শাহনেওয়াজ খান সুমন
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৬ এএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দাবির মিছিল থামছেই না

রাজধানীবাসীর ভোগান্তি চরমে
দাবির মিছিল থামছেই না

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নানান দাবি-দাওয়া নিয়ে ঢাকার রাজপথে আন্দোলন এখন নিত্যদিনের চিত্র। ন্যায্য-অন্যায্য, যৌক্তিক-অযৌক্তিক দাবি আদায়ে অনেক পেশাজীবী সংগঠন, শিক্ষার্থী, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ আন্দোলন করছেন। কৌশল হিসেবে আন্দোলনকারীরা যে যেভাবে পারছেন সেখানেই বসে পড়ছেন। কথায় কথায় চলছে সড়ক অবরোধ। এক দিনে সর্বোচ্চ ১৭টি জায়গায় অবরোধের ঘটনাও ঘটেছে। বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার দাবি করে আন্দোলনকারীরা উপদেষ্টার কার্যালয়, সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান-অনশন করছেন। বাদ যাচ্ছে না প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনও। গত ছয় মাসে ঢাকায় ১৮০টি আন্দোলন হয়েছে। কিছু আন্দোলনের উত্তাপ দেশজুড়েও ছড়িয়ে পড়েছে। আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণ ও নির্বিঘ্ন যান চলাচল নিশ্চিতে পুলিশও অসহায়। সড়ক আটকে বিক্ষোভ-আন্দোলন করায় রাজধানীতে যানজট আরও তীব্র হয়েছে, মানুষের ভোগান্তি-কষ্ট বেড়েছে কয়েকগুণ। মানুষকে জিম্মি করে পথঘাট বন্ধ করা হলেও তাতে থোড়াই কেয়ার করছেন আন্দোলনকারীরা। এ নিয়ে যারপরনাই ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী।

রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার আমলে কেউ দাবি-দাওয়া নিয়ে সড়কে নামতে পারতেন না। পুলিশের লাঠিচার্জ-গুলি, পাশাপাশি হেলমেট বাহিনীর তাণ্ডবে আন্দোলন থমকে যেত। এতদিন এক পক্ষ সব সুবিধা নিয়ে এসেছে, যারা পাননি তারা বেশিরভাগই আন্দোলনে নেমেছেন। এ ছাড়া সরকারকে নাজুক ভেবে অনেকেই দ্রুত দাবি আদায়ের চেষ্টায় নেমেছেন। আন্দোলনকারীদের দাবি যতটা না যৌক্তিক, এর চেয়ে পতিত সরকারের চক্রান্ত বেশি ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন অনেকে। মূলত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পরিকল্পিতভাবে সড়কে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, দাবি আদায়ে এসব আন্দোলনের মধ্যে পতিত আওয়ামী সরকারের প্রশিক্ষিত কর্মীরা ঢুকে পড়ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এ চক্রের আসল উদ্দেশ্য দাবি আদায় নয়, সরকারকে বেকায়দায় ফেলে আওয়ামী লীগকে সদলবলে ফিরিয়ে আনা।

গত বছরের ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল একবারে নাজুক। বিপর্যস্ত অবস্থায় দায়িত্ব নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার যখন কিছুটা গুছিয়ে ওঠার চেষ্টা শুরু করে, তখন একের পর এক যৌক্তিক-অযৌক্তিক আন্দোলন শুরু হয়। বাড়তে থাকে সরকারের ওপর নানা চাপ। এ পরিস্থিতি এখনো আছে। কারও দাবি চাকরি স্থায়ীকরণ, কেউ চান সরকারীকরণ। বদলি নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা ইস্যুতে আন্দোলন। এমএলএসএস থেকে শুরু করে বাদ যাননি ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তারাও। অটোরিকশা থেকে অটোপাস, আনসার থেকে পুলিশ। বিসিএস থেকে বিডিআর কিংবা শ্রমিক; আন্দোলন যেন থামছেই না।

প্রথমদিকে আন্দোলনকারীরা নানা দাবি নিয়ে জড়ো হতেন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে। সেখানে একসঙ্গে পাঁচ থেকে ছয়টি সংগঠনও নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। পরে আন্দোলনকারীদের তীর্থভূমিতে পরিণত হয় শাহবাগ। গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে দিনে ১৪ থেকে ১৫টি সংগঠনও রাজপথে নানা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। ১৯ আগস্ট এক দিনে ঢাকার বিভিন্ন সড়কের মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে অন্তত ১৭টি সংগঠন। গণঅভ্যুত্থানের সময় স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষাগুলো না দিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে ফল প্রকাশের দাবিতে কিছু ছাত্র আন্দোলন করেন। এর বিপরীতে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতেও আন্দোলন হয়। পরে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়েই ফল প্রকাশ হয়। তাতে যারা পাস করেননি, তারাও নামেন আন্দোলনে, ঘেরাও করেন শিক্ষা বোর্ড।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকদের আন্দোলন চলে টানা ৯ দিন। দিনের বিভিন্ন সময়ে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করে রাখেন তারা। ঊর্ধ্বতন-অধস্তন পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বৈষম্য নিরসনসহ ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন অধস্তন কর্মকর্তারা। অন্যদিকে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ১৩ আগস্ট আন্দোলনে নামেন আনসার সদস্যরা। দাবি আদায়ে ২৫ আগস্ট আনসার সদস্যরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সচিবালয় ঘেরাও করেন। সেই রাতে সচিবালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ হয়। আন্দোলন করে ৪৩ বিসিএসএ বাদ পড়ারাও। ৪০ ব্যাচের অব্যাহতিপ্রাপ্ত এসআইদের, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ইস্যুতে সচিবালয় অবস্থান-অনশন কর্মসূচি চলে। পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী শব্দ নিয়ে আন্দোলন-সংঘর্ষ হয় চার দিন। এ ছাড়া বিডিআর সদস্যদের পরিবার ও চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরাও নামেন রাজপথে। এরপর সারা দেশে রেল চলাচলই বন্ধ করে দেন রানিং স্টাফরা। চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবিতেও চলে আন্দোলন।

গত ২৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সবার সহযোগিতা চেয়ে বলেছিলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিদিন সচিবালয়ে, আমার অফিসের আশপাশে, শহরের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করা হচ্ছে। গত ১৬ বছরের অনেক দুঃখ-কষ্ট আপনাদের জমা আছে। সেটা আমরা বুঝি। আমাদের যদি কাজ করতে না দেন, তাহলে এই দুঃখ ঘোচানোর সব পথ বন্ধ হয়ে থাকবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আমাদের কাজ করতে দিন। আপনাদের যা চাওয়া, লিখিতভাবে আমাদের দিয়ে যান। আমরা আপনাদের বিপক্ষ দল নই। আইনসংগতভাবে যা কিছু করার, আমরা অবশ্যই করব। কিন্তু আমাদের ঘেরাও করে কাজে বাধা দেবেন না।’ প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানের পরও সড়ক আটকে আন্দোলন বন্ধ হয়নি।

চলতি বছরে এসে বেশি ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বাতিলের দাবিতে আন্দোলন। এ নিয়ে পুরো মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। অবশ্য এরই মধ্যে দুপক্ষ আলোচনায় বসে অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কিছুটা শান্ত হয় পরিস্থিতি। তবে সাত কলেজের আন্দোলনের সমাধান শেষে মানুষ যখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে যাচ্ছিলেন, তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদার নিয়ে কঠোর আন্দোলনে নামেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে, জুলাই আন্দোলনে আহতদের উন্নত চিকিৎসা, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের দাবিতে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশপ্রাপ্তরা চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চলছে।

এদিকে ব্যস্ত এই নগরীতে দাবি আদায়ের জন্য এমন ভোগান্তি সৃষ্টি করার সুযোগ দেওয়ায় প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। অন্যদিকে নগর পরিকল্পনাবিদ, সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, আন্দোলনকারীদের দাবি যৌক্তিক না অযৌক্তিক তা সবার আগে দেখতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথাও চিন্তা করতে হবে। আলোচনায় ফল না এলে প্রয়োজনে সরকারকে হার্ডলাইনে যেতে হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্দোলন করলেই কিছু দাবি পূরণ করে ফেলার কারণে মূলত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে; কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দাবি-দাওয়া পূরণের সরকার নয়, এই মেসেজ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ সুযোগে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী গ্রুপও মাঠে নেমে এসেছে। সরকারের উচিত ছিল শুরুতেই তাদের অবস্থান শক্তভাবে জানিয়ে দেওয়া।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল কালবেলাকে বলেন, অবৈধ উপায়ে অঢেল অর্থের মালিক হয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা সেসব টাকা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অশান্তি করছে। এর কারণ হলো, একসময় মানুষ বাধ্য হয়ে যেন বলে আগেই তো ভালো ছিলাম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সেই চক্রান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই যেখানে-সেখানে রাস্তা অবরোধ ও আন্দোলনের নামে মানুষকে ভোগান্তি দেওয়া হচ্ছে। এর পেছনে প্রশাসনে থাকা স্বৈরাচারের ইন্ধনও রয়েছে। অবিলম্বে ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, এতদিন একপক্ষ সুবিধা নিয়েছে। বঞ্চিতরা তাই ব্যস্ত দ্রুত নিজেদের ঘাটতি মেটাতে। এ জন্য তারা দাবি আদায়ে রাজপথে নামছেন। তারা মনে করছেন, একটা অপরচুনিটি সামনে আসছে, এ সময়টাকে ইউটিলাইজ করতে সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের স্বার্থ আদায়ের জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, দাবি আদায়ে জিম্মি করে বাধ্য করার যে সংস্কৃতি, এর পরিবর্তন করতে হবে। দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নামার আগে টেবিল আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের বিষয়টি প্রধান বিবেচ্য হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে যারা দাবি পূরণ করবেন, তাদেরও আলোচনা করে পূরণের সদিচ্ছার ঘাটতি আছে। যারা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন, তাদের রয়েছে বিশ্বাসের ঘাটতি। দাবিগুলো যৌক্তিকতার নিরিখে পর্যায়ক্রমে পূরণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দাবি আদায় করতে গিয়ে জনভোগান্তি হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হবে। সেদিকেও বিক্ষোভকারীদের লক্ষ করতে হবে। কেউ বা কোনো গোষ্ঠী যেন দাবি আদায়কে ইস্যু করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আজ থেকে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর

জনবল সংকটে কোটি টাকার হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

বায়ুদূষণে শীর্ষে কিনশাসা, ঢাকার অবস্থান কত?

আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু আজ

ছেলেদের জন্য কিছু স্টাইলিশ আউটফিট কম্বিনেশন

বুয়েট শিক্ষার্থীদের ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ আজ

আর্জেন্টিনার আগেই এশিয়া সফরে আসছে ব্রাজিল, জেনে নিন ম্যাচসূচি

দুর্ভিক্ষের গাজায় পদে পদে বিপদ, নিহত আরও ৬৪

বৃষ্টিতে বাইক চালাতে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি

যুবকের কাণ্ডে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ

১০

২০২৬ সালে রোজা শুরু হতে পারে যেদিন থেকে

১১

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে রিভিউ আবেদনের শুনানি ফের আজ

১২

সকালে উঠে ভুলেও করবেন না এই ৫ কাজ

১৩

উন্নত ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মূল প্রেরণা কাজী নজরুল : রিজভী

১৪

কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

১৫

সহপাঠীদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ, কচুরিপানার নিচে মিলল লাশ

১৬

সপ্তাহের ব্যবধানে সাড়ে ৪ হাজার সেনা হারাল ইউক্রেন

১৭

অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার পদে নিয়োগ দিচ্ছে আড়ং

১৮

রাজধানীতে আজ কোথায় কোন কর্মসূচি

১৯

এসিআই-এ নিয়োগ, আবেদন করুন অনলাইনে

২০
X