ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদামে প্রায় ১৫০ ভরি ওজনের স্বর্ণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ৬টি ডিটেনশন মেমোর (ডিএম) এই পণ্য গুদামে মিলছে না। এখন একে অন্যকে দোষারোপ করছেন গুদামের কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, এসব স্বর্ণ জব্দ করে গ্রাহককে ডিএমের কপি দিলেও সার্ভারে এন্ট্রি দেননি গুদাম কর্মকর্তারা। এখন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্ট করছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এর মধ্যে আগামী সাত কার্যদিবসে এসব স্বর্ণ খুঁজে বের করতে না পারলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এর আগে বেনাপোল কাস্টম হাউসে স্বর্ণ নিয়ে বড় ধরনের কেলেংকারির ঘটনা ঘটে। পরে গুদামের আলাদা নীতিমালা থেকে শুরু করে সফটওয়্যারে এন্ট্রির বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু এত নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেও প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ উধাও হওয়া নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন নিয়ে। এ ছাড়া সঠিকভাবে তদন্ত করলে আরও অনেক ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলেও মনে করেন খোদ কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এদিকে গুদামের দায়িত্বে থাকা সহকারী রাজস্ব মো. সাইদুল ইসলাম সাহেদের বদলি আদেশ স্থগিতা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার কাস্টম হাউসের করা আদেশে বলা হয়েছে গুদামের মূল্যবান জিনিসপত্র বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত তার এয়ার ফ্রেইট ইউনিটে বদলির আদেশ স্থগিত থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুদামের দায়িত্বে থাকা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম সাহেদ স্বর্ণ হারানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে আরেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আকরাম শেখ কালবেলাকে বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আর কিছু না বলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।
কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, গত ১৭ জুলাইয়ে ৬টি ডিএমের বিপরীতে আসা স্বর্ণ পাচ্ছেন না গুদাম কর্মকর্তারা। আর এই স্বর্ণ বুঝিয়ে দিতে অসহযোগিতা করছেন গুদাম কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম সাহেদ। বিভিন্ন অজুহাতে তিনি সময়ক্ষেপণ করছেন বলেও জানিয়েছেন গুদামে বদলি হওয়া কর্মকর্তারা। সর্বশেষ গত রোববার গুদামের পণ্য বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও গুদাম কর্মকর্তা তা বুঝিয়ে দিতে পারেননি, যার কারণে তার বদলি আদেশ স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন অন্য কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার একেএম নুরুল হুদা আজাদ কালবেলাকে বলেন, গত ১৩ আগস্ট প্রায় আড়াইশ ডিএম ইস্যু হয়েছে। এর মধ্যে হয়তো কোনোটা ভুলক্রমে দুবার এন্ট্রি হতে পারে। বেশি ডিএমের কারণে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। কিন্তু হারিয়ে যায়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
যে ডিএম নম্বরের স্বর্ণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সেগুলো হলো—২০২৩০৮৫৩৬০৩, ২০২৩০৮৫৩৬০৬, ২০২৩৩০৮৫৩৬১৪, ২০২৩০৮৫৩৬১৮, ২০২৩০৮৫৩৬১৯, ২০২৩০৮৫৩৬২১।
মন্তব্য করুন