সজিব ঘোষ
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ০৭:৩৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বেদিশায় ভারতীয় ঋণের রেল প্রকল্প, বাতিল হচ্ছে দুটি

লাইন অব ক্রেডিট চুক্তি
বেদিশায় ভারতীয় ঋণের রেল প্রকল্প, বাতিল হচ্ছে দুটি

দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে শুরু হয়েছিল রেল সম্প্রসারণের একটি আশাব্যঞ্জক যাত্রা—‘লাইন অব ক্রেডিট’ (এলওসি)-এর আওতায়। তিনটি বৃহৎ চুক্তির ভিত্তিতে বাস্তবায়নের কথা ছিল মোট আটটি অবকাঠামো প্রকল্প, যার ছয়টিই ছিল রেল খাতে। কিন্তু বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ভারতে কৌশলগত অগ্রাধিকার পুনর্মূল্যায়নের জেরে এই কর্মসূচির গতি এখন অনিশ্চিত। ভারত সরকার তিনটি প্রকল্পের অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ার পথে হাঁটছে। আবার তিন প্রকল্পের মধ্যে দুটি প্রকল্প একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এই প্রকল্প দুটি হলো রংপুরের কাউনিয়া থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েলগেজ লাইনে রূপান্তর করার প্রকল্প এবং খুলনা থেকে দর্শনা পর্যন্ত নতুন ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প।

তবে ভারতীয় ঋণ বাতিল হলেও বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণের প্রকল্পটি বন্ধ হচ্ছে না। এই প্রকল্পের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে নতুন করে অর্থায়ন খোঁজা হচ্ছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান কালবেলাকে বলেন, ‘এগুলো ভারতের নর্থইস্টে ট্রেন নেওয়ার প্রকল্প ছিল। এগুলো আমরা রিভিউ করব বলেছি। ভারত কাজ করছে না। পরিষ্কার করা দরকার, এখানে আমরা ঋণ বাতিল করিনি বা চুক্তি থেকে সরে আসিনি। বরং ভারত ঋণ বন্ধ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকায় মিটিং করে ঋণ বন্ধের বিষয়টি তারা (ভারতীয় প্রতিনিধিদল) জানিয়ে গেছে। তারপর ভারত ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু এখনো অফিসিয়াল ফর্মালিটিস শেষ হয়নি। দুইটা প্রকল্প আমরা বাদ করে দেব। ভারতের সঙ্গে এখনো চুক্তি থাকলেও বগুড়া-সিরাজগঞ্জের জন্য আমরা বিকল্প অর্থায়ন খুঁজে রাখতে চাচ্ছি।’

এই তিন প্রকল্পের বাইরেও রেলে ভারতীয় ঋণে আরও তিনটি প্রকল্প চলমান আছে। সেগুলোর অগ্রগতিও শুরু থেকেই খুব একটা সুবিধার না। প্রকল্পের গতি কম ও ঋণ ছাড়ের জটিলতা শুরু থেকে ভুগিয়েছে। আবার দুই দেশের সীমান্তবর্তী প্রকল্পগুলোর কাজ বিভিন্ন সময় দুই দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী সংস্থা বিজিবি ও বিএসএফের অনুমতি সংক্রান্ত জটিলতায় থেমে ছিল।

ভারতের সঙ্গে এলওসির প্রথম চুক্তি হয় ২০১০ সালে। ঋণের অর্থমূল্য ধরা হয় ৮৬ কোটি ডলার। দ্বিতীয় এলওসি চুক্তি হয় ২০১৬ সালে। এতে অর্থমূল্য ধরা হয় ২০০ কোটি ডলার। তৃতীয় এলওসির চুক্তি হয় ২০১৭ সালে। অর্থমূল্য ধরা হয় ৪৫০ কোটি ডলার। অর্থাৎ মোট প্রস্তাবিত ঋণের পরিমাণ ৭৩৬ কোটি ডলার। এ পর্যন্ত এসব ঋণ চুক্তির আওতায় অর্থছাড় হয়েছে ১৮৫ কোটি ডলারের মতো।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ঋণের সুদহার এক শতাংশ ও প্রতিশ্রুতি ফি শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ নির্ধারণ হয়। খেলাপি হলে দুই শতাংশ হারে সুদ ধার্য রয়েছে। পাঁচ বছরের রেয়াতকালসহ ১৫ বছরে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। প্রথম এলওসির অর্থ পরিশোধ শুরু করেছে বাংলাদেশ। তিন এলওসির আওতায় মোট ৪০টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। এ পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে ১৫টির।

রেলের ক্ষেত্রে চুক্তি ছিল, কাজের ৭৫ শতাংশ জনবল, পণ্য ও সেবা দেবে ভারত—এমন শর্ত পুরোপুরি অনৈতিক উল্লেখ করে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামছুল হক কালবেলাকে বলেন, ‘কূটনৈতিক বিবেচনায় ভারত ঋণ দেওয়ার সামর্থ্য রাখে না। আধিপত্য বিস্তার ছিল ভারতের মূল লক্ষ্য।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে চুক্তিগুলো নীতি মেনে হয়নি। তাই এখন রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যাওয়ায় এসব প্রকল্প থেকে ভারত সরে যাচ্ছে। ভারত ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে—এটা এক ধরনের আশীর্বাদ।’

পার্বতীপুর-কাউনিয়া রেলপথ: দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে রংপুরের কাউনিয়া পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার রেলপথ হওয়ার কথা ছিল। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো কাজ শুরুই হয়নি।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিদ্যমান মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে পুরোনো লাইনের পাশ দিয়েই নতুন ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ করতে চায় রেলওয়ে। এতে কাজ পেছায়। আবার ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের এক্সিম ব্যাংক পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রমে সময় নষ্ট করে।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। এলওসি চুক্তির আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয়ের মধ্যে এক হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা ভারতের দেওয়ার কথা ছিল।

প্রকল্পের জন্য ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভারতীয় আরভি অ্যাসোসিয়েট এবং স্টুপ কনসালট্যান্টস লিমিটেডকে যৌথভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রায় ৭৬ কোটি টাকা খরচ করে এই দুই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শ অনুযায়ী পুরোনো মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েলগেজ না করে পাশ দিয়ে নতুন ডুয়েলগেজ লাইন বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে।

পার্বতীপুর-কাউনিয়া সেকশনটি রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরকে দেশের মূল রেলপথের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এই রেলপথটি ১৯৮৭ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়। বর্তমানে এই পথে স্লিপারের মেয়াদ উত্তীর্ণসহ অন্যান্য অবকাঠামো উপকরণ জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে এই রেলপথে আন্তঃনগর ট্রেনসহ অন্যান্য ট্রেন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে না।

খুলনা-দর্শনা রেলপথ: খুলনা থেকে দর্শনা জংশন সেকশনে সিঙ্গেল লাইনকে ডাবল লাইনে রূপান্তর করতে ২০১৮ সালে একনেকে প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা প্রণয়ন করতে গিয়েই সময় চলে গেল। এখন এই প্রকল্পটি বাদ দেবে অন্তর্বর্তী সরকার।

খুলনা-দর্শনা ডাবল লাইনে তিন হাজার ৫০৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ১২৬ দশমিক ২৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ মূল পথের পাশাপাশি ১৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার লুপলাইন করার পরিকল্পনা ছিল। এ ছাড়া পুরো পথে ১৬টি স্টেশন পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা, ৩৭টি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে পাঁচটি নতুন এবং ১২টি পুনর্নির্মাণ করা এবং নতুন করে ১১০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করার কথা ছিল।

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ প্রকল্প: বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১০ সালে এডিবির অর্থায়নে প্রাক-সমীক্ষা করা হয়। অর্থ সংকটের কারণে দীর্ঘদিন এই প্রকল্প এগোয়নি। ২০১৭ সালে ভারতের এলওসি অর্থায়নে রেলপথটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয় ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেক সভায়। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা ছিল। এখন এই প্রকল্পের জন্য ফের নতুন করে সরকারকে অর্থায়ন খুঁজতে হচ্ছে।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জে সরাসরি প্রায় সাড়ে ৮৬ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ লাইনের পাশাপাশি ১৬ দশমিক ৩০ কিলোমিটারের লুপলাইনও নির্মাণের কথা রয়েছে।

রেলের চলমান এলওসি প্রকল্পের কী অবস্থা: ভারতীয় ঋণের আওতায় চলমান প্রকল্পগুলোর অবস্থা ভালো নয়। কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশনে ৪৪ কিলোমিটার রেলপথটি ২০১১ সালে পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতদিনে এই প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ২০.৪২ শতাংশ।

প্রকল্পের আওতায় ৪৪ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার মেইন লাইনের পাশাপাশি সাত দশমিক ৭৭ কিলোমিটার লুপলাইনসহ মোট ৫১ দশমিক ৯৪ কিলোমিটার রেললাইন হবে। এ সেকশনে গার্ডার ব্রিজ ১৭টি ও কালভার্ট ৪২টি পুনর্নির্মাণ করা হবে। থাকবে আধুনিক সিগন্যাল ব্যবস্থা। ছয়টি স্টেশন ভবন এবং প্ল্যাটফর্ম পুনর্নির্মাণ করার কথাও রয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল।

২০১০ সালে শুরু হয় খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প। তিন বছর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো ১০০ ভাগ কাজ শেষ হয়নি। এই প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয় পাঁচ বছর পর। বারবার নকশাও পরিবর্তন করা হয়। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৭২১ কোটি টাকা। কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়ে। সঙ্গে ব্যয় বেড়ে হয়েছে চার হাজার কোটি টাকার বেশি।

আরেক প্রকল্প ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ ডাবল লাইন এখনো ঝুলছে। এলওসি অর্থায়নে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প। ২০১২ সালে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। এই প্রকল্পে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় ৮৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে কাজ। এ প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করতেই লেগেছে ছয় বছর। আবার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়ায় বাস্তবায়ন নকশার পরিবর্তন করতে হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেম কালবেলাকে বলেন, বিভিন্ন সময় নানা জটিলতায় প্রকল্পগুলোর এ অবস্থা হয়েছে। এখন নতুন করে প্রকল্পগুলো নিয়ে ভাবা হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের বড় ১০ খবর

টিভিতে আজকের খেলা

চট্টগ্রামে বিএনপি নেতা বহিষ্কার

যুদ্ধ আমাদের ইমানি শক্তি বাড়িয়েছে : ইরানি আলেমদের প্রতিক্রিয়া

রাশিয়ায় ইরানি শিশুর সঙ্গে এ কেমন আচরণ, সারা বিশ্বে তোলপাড় (ভিডিও)

২৭ জুন : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের

২৭ জুন : আজকের নামাজের সময়সূচি

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মানববন্ধন আজ 

পরীক্ষার সুযোগ পেতে পারেন সেই ছাত্রী

১০

সাতসকালে রাজধানীতে ছিনতাইয়ের শিকার কালবেলার সাংবাদিক

১১

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১২

সুবর্ণচরে সাগরিকার সফল উদ্যোক্তাদের সম্মাননা প্রদান

১৩

ইসরায়েলের হত্যা পরিকল্পনা থেকে যেভাবে বেঁচে গেলেন খামেনি

১৪

ফজরের পর যে গুরুত্বপূর্ণ আমল করবেন

১৫

গায়িকা কনার বিচ্ছেদ নিয়ে সালমার পোস্ট

১৬

ঢাবির মলচত্বরে গলায় ফাঁস দিয়ে হাসপাতালে তরুণী

১৭

ব্রিটিশ আমল থেকে ঢাকায় রথযাত্রার প্রচলন

১৮

অবিলম্বে পুশইনের ঘটনা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

১৯

তারেক রহমানের ফেরার জন্য লন্ডন ও বাংলাদেশে প্রস্তুতি চলছে : এ্যানি

২০
X