মাসুদ রানা
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৪০ এএম
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০১:২৮ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বানুর সরলতার সুযোগ নিয়ে...

প্রতারণা
বানুর সরলতার সুযোগ নিয়ে...

প্রতিবন্ধী বানু আক্তারের জন্ম থেকেই দুটি হাত নেই। দুটি পা দিয়েই সব কাজ করেন। একসময় মোবাইলের রং নম্বরে নীলফামারীর খোরশেদ আলমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের পাঁচ বছর পর বিয়ে করেন তারা। তাদের কোলজুড়ে আসে ছেলে সন্তান। প্রতিকূল পরিবেশে স্বামীকে মাস্টার্স পাস করতে সহযোগিতা করেন বানু। প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের ১০ লাখ টাকা স্বামীর হাতে তুলে দেন। অনুরোধের পর প্রধানমন্ত্রী তার স্বামীকে সচিবালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করেন। তারপরও বানু ও সন্তানকে ফেলে চলে যায় স্বামী খোরশেদ। নিরুপায় হয়ে বানু বিচারের আশায় আইনের আশ্রয় নেন। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠান আদালত। বানুর এখন একটিই চাওয়া খোরশেদকে চাকরিচ্যুতসহ তার শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খোরশেদকে হাজির করা হয়। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বানু। এ সময় কালবেলার সঙ্গে তার কথা হয়। তিনি বলেন, স্বামীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছি। এক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর তাকে ধরা হয়েছে। সে যেন জামিন না পায়, সেজন্য আদালতে এসেছি। আদালতে যেন ন্যায়বিচার পান, সেটিই চাওয়া আমার।

আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে যাওয়া-আসার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখা পান বানু আক্তার। সেইসঙ্গে মিলে যায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অনুগ্রহ। আর সেই পরিচয়ের সবটা ফল ভোগ করে বানুর স্বামী। বানু আক্তার বলেন, ১ লাখ টাকা দিয়ে তাকে মাস্টার্স পর্যন্ত লেখাপড়া করিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে তাকে সরকারি চাকরি নিয়ে দিয়েছি। চাকরি পাওয়ার ছয় বছর পর আমাকে ফেলে চলে গেছে। আমার বাচ্চার বয়স ১০ বছর হলেও আজ পর্যন্ত তার বাড়ি আমাকে ওঠায়নি। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, তার সঙ্গে সংসার ছাড়াই পাঁচ বছর আছি। এতদিন ধরে কোনো যোগাযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন, সেটি নিয়েই পালিয়ে যায়। গলার হার, কানের দুল ছিল, সেগুলো নিয়ে ছোট বউকে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ দিলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। কিন্তু এখনো তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি।

বানুর আইনজীবী চৌধুরী মো. গালিব রাগিব কালবেলাকে বলেন, বানু আক্তার প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার স্বামীকে চাকরি দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান পান বানু। পরে তার স্বামী আরেকজনকে বিয়ে করে। তখন সংসার করতে চাইলে আরও টাকা দিতে হবে বলে বানুকে জানায় তার স্বামী। পর বানু তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

নীলফামারীর ডিমলা থানার সাতনাই বালাপাড়া এলাকায় ১৯৮৬ সালে জন্ম নেন বানু। তার বাবার নাম আব্দুস সাত্তার। বানু বর্তমানে গাজীপুরে তার ১০ বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে বাস করছেন। পাশাপাশি দুটি পা দিয়েই তিনি পুঁতির মালা, ব্যাগ, নৌকা, ফুল, ফলসহ বাহারি নকশার পণ্য তৈরি করেন। পা দিয়ে সেলাই মেশিন চালিয়ে তৈরি করছেন জামা-কাপড়। আর এসব বিক্রি করে চলছে তার সংসার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শাহবাগের তিন জায়গায় ৩ জনের মরদেহ

মিয়ানমারে আবারও সংঘাত, সীমান্তে গোলাগুলি

এক রাতে ছয়টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি

এবার ইসরায়েলে মোতায়েন হবে মার্কিন সেনা

ট্রাম্পের নোবেল না পাওয়ার কারণ জানাল শান্তি কমিটি

সেলস বিভাগে নিয়োগ দিচ্ছে রূপায়ন গ্রুপ

ডিএমপির ঊর্ধ্বতন ৮ কর্মকর্তাকে রদবদল

বিএনপির ৩১ দফা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে : কফিল উদ্দিন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত নজরুল / ‘যদি ফোন বন্ধ থাকে, ধরে নিও আমি বেঁচে নেই’

টাইফয়েড টিকা নিয়ে জরুরি ৫ প্রশ্নের সমাধান

১০

টি ব্যাগ দিয়ে তৈরি চা কি শরীরের জন্য নিরাপদ? কি বলছেন পুষ্টিবিদ

১১

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযুক্তদের দায়মুক্তি নিয়ে যা বললেন আসিফ নজরুল 

১২

দেশের এমবিবিএস শিক্ষায় সাইকিয়াট্রির গুরুত্ব কেন এত কম

১৩

ধানের শীষ নিয়ে টানাটানি কেন, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের

১৪

খাওয়া-দাওয়া কি সত্যিই সন্তান ধারণে প্রভাব ফেলে, কি বলছে গবেষণা

১৫

কলকাতায় মেসির সঙ্গে আসছেন নেইমার!

১৬

হলি রোজারি চার্চে বোমা হামলার ঘটনায় খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের নিন্দা 

১৭

নামাজ আদায় না করলে অন্য আমলগুলো কবুল হবে কি?

১৮

দেশের সব বিমানবন্দরের জন্য জরুরি ১০ নির্দেশনা

১৯

জনগণ আর কোনো স্বৈরাচারী সরকারকে দেখতে চায় না : আমান

২০
X