বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
মাসুদ রানা
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৪০ এএম
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০১:২৮ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বানুর সরলতার সুযোগ নিয়ে...

প্রতারণা
বানুর সরলতার সুযোগ নিয়ে...

প্রতিবন্ধী বানু আক্তারের জন্ম থেকেই দুটি হাত নেই। দুটি পা দিয়েই সব কাজ করেন। একসময় মোবাইলের রং নম্বরে নীলফামারীর খোরশেদ আলমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের পাঁচ বছর পর বিয়ে করেন তারা। তাদের কোলজুড়ে আসে ছেলে সন্তান। প্রতিকূল পরিবেশে স্বামীকে মাস্টার্স পাস করতে সহযোগিতা করেন বানু। প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের ১০ লাখ টাকা স্বামীর হাতে তুলে দেন। অনুরোধের পর প্রধানমন্ত্রী তার স্বামীকে সচিবালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করেন। তারপরও বানু ও সন্তানকে ফেলে চলে যায় স্বামী খোরশেদ। নিরুপায় হয়ে বানু বিচারের আশায় আইনের আশ্রয় নেন। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠান আদালত। বানুর এখন একটিই চাওয়া খোরশেদকে চাকরিচ্যুতসহ তার শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খোরশেদকে হাজির করা হয়। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বানু। এ সময় কালবেলার সঙ্গে তার কথা হয়। তিনি বলেন, স্বামীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছি। এক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর তাকে ধরা হয়েছে। সে যেন জামিন না পায়, সেজন্য আদালতে এসেছি। আদালতে যেন ন্যায়বিচার পান, সেটিই চাওয়া আমার।

আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে যাওয়া-আসার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখা পান বানু আক্তার। সেইসঙ্গে মিলে যায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অনুগ্রহ। আর সেই পরিচয়ের সবটা ফল ভোগ করে বানুর স্বামী। বানু আক্তার বলেন, ১ লাখ টাকা দিয়ে তাকে মাস্টার্স পর্যন্ত লেখাপড়া করিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে তাকে সরকারি চাকরি নিয়ে দিয়েছি। চাকরি পাওয়ার ছয় বছর পর আমাকে ফেলে চলে গেছে। আমার বাচ্চার বয়স ১০ বছর হলেও আজ পর্যন্ত তার বাড়ি আমাকে ওঠায়নি। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, তার সঙ্গে সংসার ছাড়াই পাঁচ বছর আছি। এতদিন ধরে কোনো যোগাযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন, সেটি নিয়েই পালিয়ে যায়। গলার হার, কানের দুল ছিল, সেগুলো নিয়ে ছোট বউকে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ দিলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। কিন্তু এখনো তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি।

বানুর আইনজীবী চৌধুরী মো. গালিব রাগিব কালবেলাকে বলেন, বানু আক্তার প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার স্বামীকে চাকরি দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান পান বানু। পরে তার স্বামী আরেকজনকে বিয়ে করে। তখন সংসার করতে চাইলে আরও টাকা দিতে হবে বলে বানুকে জানায় তার স্বামী। পর বানু তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

নীলফামারীর ডিমলা থানার সাতনাই বালাপাড়া এলাকায় ১৯৮৬ সালে জন্ম নেন বানু। তার বাবার নাম আব্দুস সাত্তার। বানু বর্তমানে গাজীপুরে তার ১০ বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে বাস করছেন। পাশাপাশি দুটি পা দিয়েই তিনি পুঁতির মালা, ব্যাগ, নৌকা, ফুল, ফলসহ বাহারি নকশার পণ্য তৈরি করেন। পা দিয়ে সেলাই মেশিন চালিয়ে তৈরি করছেন জামা-কাপড়। আর এসব বিক্রি করে চলছে তার সংসার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিরামিক এক্সপো ২০২৫ প্রারম্ভে - ডিবিএল সিরামিকস সৌজন্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ

জেলে বসেই অনার্সে ফার্স্ট, ১২ বছর পর মাস্টার্সেও প্রথম স্থান—কে এই শিবির নেতা?

ভাতিজার লাথিতে প্রাণ গেল চাচার

বহিষ্কৃত ৭৪ নেতাকে ‍নিয়ে বিএনপির সিদ্ধান্ত

কর্মবিরতির ঘোষণা শিক্ষকদের / প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা ঘিরে অনিশ্চয়তা

মা ও দুই শিশুর মরদেহ পৃথক স্থানে দাফন, মামলা হয়নি এখনো

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ধানের শীষের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে : সেলিমা রহমান

বিশ্বকাপ ড্র ফরম্যাটে বড় পরিবর্তন আনল ফিফা

গোলাম রাব্বানীর ছাত্রত্ব ও এক পদ বাতিল করল ঢাবি

সাভারে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল

১০

দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না সার

১১

দাঁড়িয়ে থাকা মোটরসাইকেলে অটোর ধাক্কা, স্কুলশিক্ষক নিহত

১২

প্রতিটি ইউনিয়নে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের ঘোষণা 

১৩

ইসলামেই আসবে সত্যিকারের মুক্তি : চরমোনাই পীর

১৪

হাসিনার লকারে শুধু পাটের ব্যাগ, যৌথ লকারে সোনার নৌকা-গয়না

১৫

রাজশাহীতে আর কোনো পুকুর ভরাট হবে না : বিভাগীয় কমিশনার

১৬

বিপিএলে নোয়াখালীর প্রধান কোচ হচ্ছেন সুজন

১৭

ব্যালটে যেমন দেখা যাবে এনসিপির শাপলা কলি প্রতীক

১৮

বার্জার অ্যাওয়ার্ড ফর ইন্টেরিয়র ডিজাইন ২০২৫ উদযাপন

১৯

এনসিপি জোটের ঘোষণা আসতে পারে আগামীকাল

২০
X