ভর্তুকি মূল্যে নির্দিষ্ট পণ্য বিক্রির লক্ষ্যে দেশের ৪ জেলায় ডিলার নিয়োগ দিচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। ডিলার হতে আগ্রহীদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদনপত্র আহ্বান করেছে সরকারি এ বিপণন সংস্থা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয় খুলনা, বাগেরহাট, মাগুরা ও ময়মনসিংহ জেলার নির্ধারিত উপজেলার ওয়ার্ড, ইউনিয়ন বা পৌরসভার জন্য ডিলার নিয়োগ করা হবে। আগামী ৩-৯ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে ডিলারশিপের আবেদন করা যাবে।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, টিসিবি অফিসে সরাসরি বা ডাকযোগে বা কুরিয়ারে কিংবা অন্যকোনো মাধ্যমে আবেদন গ্রহণ করা হবে না। শুধু অনলাইনে আবেদন করা যাবে।
সারা দেশে যেসব ওয়ার্ড, ইউনিয়ন বা পৌরসভায় ডিলার নেই সেসব জেলা, উপজেলা ও সিটিতে পর্যায়ক্রমে অনলাইনে ডিলার নিয়োগ দেবে টিসিবি।
বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইটে ( www.tcb.gov.bd) ভিজিট করার আহ্বান জানিয়েছে টিসিবি।
এদিকে চলতি অর্থবছরের (২০২৫-২৬) প্রথমার্ধের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমান অবস্থাকে বিবেচনায় রেখে নীতিগত সুদের হার (নীতি হার) আগের জায়গায় ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছেন নীতিনির্ধারকরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বেলা ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ ডেপুটি গভর্নর ও নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বলা হয়, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি কিছুটা কমলেও তা এখনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রয়েছে। টাকার অবমূল্যায়ন, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার কারণে মূল্যস্ফীতির ওপর আবারও চাপ তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমানোর ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না। মূল্যস্ফীতি যদি ধারাবাহিকভাবে কমে এবং প্রকৃত সুদের হার তিন শতাংশে পৌঁছায়, তখন ধাপে ধাপে নীতি হার হ্রাস করা হতে পারে। তবে ততদিন পর্যন্ত সুদের বর্তমান হারই বহাল থাকবে। নীতিনির্ধারকরা জানান, মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নামার আগপর্যন্ত কোনো প্রকার শিথিলতা আসবে না। নীতি হারের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ প্রদানের হার (স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি) ১১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং আমানত গ্রহণের হার (স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি) ৮ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
খেলাপি ঋণ ও দুর্বল শাসনব্যবস্থার কারণে ব্যাংক খাত দীর্ঘদিন ধরেই চাপের মধ্যে রয়েছে। এসব সংকট থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সংস্কারমূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্য পৃথক ব্যবস্থা, সম্পদের গুণগত পর্যালোচনা এবং আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি (রিস্ক বেসড সুপারভিশন) চালু।
যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রধান বাজারসমূহে শুল্কবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে নমনীয়তা এনেছে।
বর্তমানে দিনে দুবার রেফারেন্স বিনিময় হার ঘোষণা করা হচ্ছে, যাতে মুদ্রাবাজারে স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা আসে। তবে বিনিময় হারে অতিরিক্ত অস্থিরতা ঠেকাতে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে হস্তক্ষেপ করবে বলেও জানানো হয়েছে।
সরকারের বাজেট ঘোষণায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য এবং ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ধরে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে তাদের নীতি সহনশীল হলেও কড়াকড়ি থাকবে।
মন্তব্য করুন