ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের আবেদন করেছেন।
এর আগে নানা দুর্নীতি, অনিয়ম এবং অসদাচরণের প্রতিবাদে করপোরেশনের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা বিক্ষোভ এবং কর্মবিরতি পালন করছিলেন।
এর মধ্যে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশিকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তারা।
দক্ষিণ সিটির প্রকৌশলী এবং কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘ বছর ধরে দুর্নীতি আর অনিয়মের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন প্রকৌশলী আশিক। এছাড়া্ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তুচ্ছ কারণে মারধর, রাষ্ট্রবিরোধী মামলা দায়ের, ফাইল আটকিয়ে ঘুষ গ্রহণসহ নানা অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে প্রধান প্রকৌশলীকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিলেও আজ বিক্ষুব্ধ প্রকৌশলী এবং কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করেন।
জানা যায়, ওয়ান-ইলেভেনের সময়কালে গঠিত টাস্কফোর্স আশিককে দক্ষিণ সিটির এক নম্বর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুকৌশলে সরকারি দলের নেতাদের ম্যানেজ করে বাগিয়ে নেন একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদ। দায়িত্ব পালন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালকের পদও।
এমনকি নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, সহকারী প্রকৌশলী পদ থেকে মাত্র একদিনের মধ্যেই নির্বাহী প্রকৌশলী এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পান আশিকুর রহমান। এমনকি সর্বশেষ গত দুই বছর আগে নিয়মবহির্ভূতভাবে বাগিয়ে নেন প্রধান প্রকৌশলীর পদও।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনে পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে চাকরি করেছেন। সেখানেও জড়িয়েছেন দুর্নীতিতে। সে দুর্নীতির ঘটনায় তার বিরেুদ্ধে তদন্ত হয়। তবে সে তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি। এছাড়াও শিল্প মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক পদে থাকার সময়েও দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন এ প্রকৌশলী।
এদিকে আজ বিকালে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর এক আবেদনে চাকরি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন আশিকুর রহমান।
লিখিত চিঠিতে তিনি বলেন, সরকারি চাকরি আইন, ২০০৮-এর ৪৪ ধারা অনুসারে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আমি অবসর গ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম। প্রযোজ্য আইন অনুসারে আমার ঐচ্ছিক অবসর সময়মতো সদয় বিবেচনার জন্যে বিনীত অনুরোধ রইলো।
এসব বিষয়ে জানতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মন্তব্য করুন