রাজধানীর পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও নাগরিক জীবনমান রক্ষায় পার্ক, খেলার মাঠ ও জলাধার সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরসমূহে চিঠি পাঠিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রণীত ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) ২০২২-২০৩৫’-এ প্রস্তাবিত এসব স্থানের জমি ক্রয়-বিক্রয় ও ভূমি ব্যবহার পরিবর্তন রোধে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ডিএনসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে ভূমি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, রাজউক, জেলা প্রশাসকগণ, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সাবরেজিস্ট্রার অফিস এবং রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়।
ডিএনসিসির পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, নগরের বাসযোগ্যতা বজায় রাখা ও টেকসই উন্নয়নের জন্য পার্ক, খেলার মাঠ, জলকেন্দ্রিক পার্ক ও জলাধার সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
চিঠিতে ড্যাপ-এ প্রস্তাবিত এসব স্থানের জমির ভূমি ব্যবহার পরিবর্তন না করা, খাজনা আদায় সংক্রান্ত বিধি-বিধান আরোপ এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে ডিএনসিসির ৫ম বোর্ড সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রস্তাবিত পার্ক ও জলকেন্দ্রিক পার্কের স্থানে সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন এবং অননুমোদিত দখল ও ব্যবহার রোধে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে আফতাবনগর সংলগ্ন বাড্ডা এলাকার সাঁতারকুল, বাড্ডা ও সুতিভোলা মৌজার প্রায় ১৫০ একর জলকেন্দ্রিক পার্কের প্রস্তাবিত স্থানে সাইনবোর্ড স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
একইভাবে বৃহত্তর মিরপুরের বাউনিয়া, সেনপাড়া পর্বতা, বিশিল, পাইকপাড়া, নন্দারবাগ, বড় সায়েক, মিরপুর ও নবাবের বাগ এলাকায় প্রায় ৭৫৯ একর, কাফরুলের লালাসরাই এলাকায় ১৮ দশমিক ১১ একর, ক্যান্টনমেন্ট থানার জোয়ার সাহারায় ৪৩ দশমিক ২৯ একর, মিরপুরে ৫৮৭ একর, বাড্ডা-ভাটারা-সাঁতারকুল, বাড্ডা ও সুতিভোলায় ১৮৫ দশমিক ২৩ একর, খিলগাঁও এলাকায় ১৭০ দশমিক ৫০ একর, তুরাগের বাউনিয়ায় ১৯৭ দশমিক ২৬ একর, পল্লবীর মারুলে ২৪ দশমিক ৬১ একর এবং দক্ষিণ খান, উত্তর খান ও বরুয়া এলাকায় ৭১ দশমিক ২৬ একর জমিতে প্রস্তাবিত জলাধার, পার্ক ও খেলার মাঠে সাইনবোর্ড স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। মোট প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর প্রস্তাবিত জলাধার, পার্ক ও খেলার মাঠ সংরক্ষণে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে নগরের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও নাগরিক জীবনমান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে বলে মনে করে ডিএনসিসি।
ডিএনসিসি আশা করছে, ড্যাপ ২০২২-২০৩৫ অনুযায়ী প্রস্তাবিত জলাধার, মাঠ ও পার্ক সংরক্ষণ করা গেলে নগরের পরিবেশ ও নাগরিক জীবনমান উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন হবে ও ঢাকাকে একটি জলবায়ু সহনশীল শহরে রূপান্তর সহজ হবে।
মন্তব্য করুন