কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫, ০৬:৪৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নিয়মের মধ্যে না এলে রেস্টুরেন্টগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : রাজউক চেয়ারম্যান

বহুতল ভবনে অননুমোদিত রেস্টুরেন্ট পরিদর্শনে রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা
বহুতল ভবনে অননুমোদিত রেস্টুরেন্ট পরিদর্শনে রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম বলেছেন, বহুতল ভবনের রেস্টুরেন্টগুলোর অনুমতি যাচাইবাছাই করা হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। নিয়মের মধ্যে না এলে রেস্টুরেন্টগুলোর বিদ্যুৎ ও পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) ধানমন্ডির সাত মসজিদ সড়কে বহুতল ভবনে অননুমোদিত রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন করে এ কথা বলেন তিনি।

অগ্নি ও ভূমিকম্পসহ ভবন সম্পর্কিত অন্যান্য ঝুঁকি হ্রাসে সচেতনতা বাড়াতে এ পরিদর্শনে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসিসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এ সময় বেশকিছু রেস্টুরেন্টে পর্যাপ্ত অগ্নি প্রতিরোধক ব্যবস্থা, অগ্নিনির্গমন পথ না থাকাসহ নানা অসংগতি ও অনিয়ম খুঁজে পায় পরিদর্শনকারী দল। তবে কোনো রেস্টুরেন্টকে জরিমানা বা শাস্তি প্রদান করা হয়নি।

সাতমসজিদ রোডের জাস্টিজ আমিন আহমেদ ট্রাস্ট ভবনে দুইটি বেজমেন্টসহ ১৩ তলার প্রায় প্রতিটি তলায় এক বা একাধিক রেস্টুরেন্ট পাওয়া যায়। পরিদর্শনকালে ইমারতটিতে ফায়ার সিঁড়িতে যাওয়ার সিম্বলিক চিহ্ন, অগ্নি নিরোধক দরজার অনুপস্থিতি দেখা যায়। এছাড়াও ইমারতটির বিভিন্ন তলাতে অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ তলাতে রেস্টুরেন্ট পরিচালিত হতে দেখা যায়।

রাজউক অনুমোদিত লেআউট নকশায় ১৩ তলা উল্লিখিত থাকলেও সরেজমিনে ১৪ তলা আংশিক নির্মিত পাওয়া যায়। ফরেস্ট লাউঞ্জ নামক একটি রেস্টুরেন্টকে ১৩ তলার উপর উলম্বভাবে একটি তলা বৃদ্ধি করে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করতে দেখা যায়। এসময় রাজউক চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ প্রতিটি রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখেন। বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। কিছু রেস্টুরেন্টে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল এবং রেস্টুরেন্ট ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণ নেই।

সম্পূর্ণ ভবনে নকশা অনুযায়ী দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে জরুরি বহির্গমনের জন্য ফায়ার এক্সিট পাওয়া যায়নি। জরুরি বহির্গমনের সিঁড়ি ও নকশা অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে চলাচলের জন্য নকশা অনুযায়ী রাখা করিডর বন্ধ করে সেখানে স্টোর রুমের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ভবনটিতে একটি জরুরি বহির্গমনের পথ কলাপসিবল গেট দিয়ে বন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়াও রেস্টুরেন্টগুলোর ভিতরে কিচেনে অপর্যাপ্ত জায়গা থাকায় তা দুর্যোগকালে ব্যবহার অনুপযোগী ।

এসময় নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে অননুমোদিতভাবে রেস্টুরেন্ট পরিচালনার ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি ভবন মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা। এসময় রাজউক চেয়ারম্যান রেস্টুরেন্ট সমূহে আগত শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য অতিথিদের সাথে কথা বলেন এবং এ ধরনের ভবনে আসার পূর্বে ঝুঁকি বিবেচনা করার এবং সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

পরিদর্শন শেষে ভবনটির ফায়ার সেফটি সম্পর্কিত ত্রুটি বিচ্যুতির বিষয়ে মৌখিকভাবে তাৎক্ষণিক অবহিতকরণসহ অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন রাজউক চেয়ারম্যান। এছাড়াও তিনি ভবনটির বিদ্যমান রেস্টুরেন্টগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সাথে একটি মতবিনিময় সভা করবেন মর্মে জানান। পরবর্তীতে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শীলাব্রত কর্মকারের উপস্থিতিতে ভবন মালিকের পক্ষে সৈয়দ শামীম রেজা ব্যত্যয়সমূহ আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা প্রদান করেন।

পরিদর্শনকালে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে পরিচালিত এসকল রেস্টুরেন্টে অগ্নিকাণ্ডসহ যে কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসমূহ পরিদর্শন করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যত্যয়কৃত ভবনসমূহের বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, এখন রেস্টুরেন্টগুলোকে চাইলে বন্ধ করে দিতে পারতাম। কিন্তু আমরা তাদের সতর্ক করেছি যাতে জানমালের নিরাপত্তা বজায় থাকে। সাতমসজিদ রোডসহ ঢাকার অন্যান্য স্থানের এরূপ নকশা বহির্ভূত ও অননুমোদিত রেস্টুরেন্ট এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনসমূহের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে রাজউক। একটি বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তোলার জন্য ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে সকল সংস্থাকে নিয়ে কাজ করবে রাজউক।

পরিদর্শনে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজউকের সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) জনাব শেখ মতিয়ার রহমান, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) মোহা. হারুন-অর-রশীদ, প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, প্রধান নগর স্থপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা বৃন্দ ও সহযোগী সংস্থাগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আফগানদের বিপক্ষে নতুন শুরুর প্রত্যাশায় জাকের

সৌম্যর জায়গায় দলে এলেন সাকিব

বিবাহিত ব্যক্তির নামাজ অবিবাহিত ব্যক্তির চেয়ে কি ৭০ গুণ উত্তম?

এআই চশমা আনল মেটা, ক্যামেরা-ডিসপ্লে কি নেই তাতে!

ট্রফি বিতর্কে এবার ভারতীয় গণমাধ্যমকে আক্রমণ নকভির

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতিকে সতর্ক করল বিএনপি

পূজা বিঘ্ন করতে পাহাড়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দিনদুপুরে টাকাভর্তি ব্যাগ ছিনতাই

গাজা অভিমুখী ফ্লোটিলায় উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা

দুর্গাপূজায় হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে আছে বিএনপি : নজরুল ইসলাম আজাদ

১০

রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মাঠে নামছে বার্সা-পিএসজি, ফ্রিতে দেখবেন যেভাবে

১১

‘তারেক রহমান যে কোনো সময় দেশে ফিরবেন’

১২

কার মাধ্যমে ফেমাস হয়েছেন, জানালেন অনন্ত জলিল

১৩

নতুন দায়িত্ব পেলেন এনসিপির ১০ কেন্দ্রীয় নেতা

১৪

নিম্নচাপে পরিণত সাগরের লঘুচাপ, কোন সমুদ্রবন্দর থেকে কত দূরে

১৫

সিজারের কাঁচি দিয়ে ৪ জনকে জখম করলেন চিকিৎসক

১৬

চিয়া সিডের তেল মাথায় দিলে কী হয়? জানলে চমকে যাবেন

১৭

রবিনসনের শতকেও লাভ হলো না, মার্শ ঝড়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়

১৮

৭০ বছরে বিয়ে করলেন বৃদ্ধ, ‘বাসর রাতে’ মৃত্যু

১৯

অবসর নিয়ে মেসিকে সতর্ক করে দিলেন সাবেক ব্রাজিল তারকা

২০
X