রাজধানীতে বিএনপির এক কর্মীকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত ওই কর্মীর নাম সাইফ হোসেন মুন্না। তিনি কলাবাগান থানার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
রোববার (১৮ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কলাবাগান এলাকার সেন্ট্রাল রোডের ভূতের গলির প্রবেশমুখে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময়ের একটি সিসিটিভির ফুটেজ কালবেলার হাতে এসেছে। নৃশংসভাবে মুন্নাকে কুপিয়ে জখম করা হলেও সন্ত্রাসীরা বহাল তবিয়তে এলাকায় ঘুরাফেরা করছে বলে ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ। যদিও পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। তবে অভিযুক্তদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের বরাতে জানা যায়, রোববার রাতে কাজ শেষে বাড়িতে ফেরার পথে সাইফ হোসেন মুন্নার গতিরোধ করে মামুন নামে এক যুবক। পরে ফিল্মি স্টাইলে মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে আসেন এমসি শুভ ও রানা নামে দুজন। আরেকটি মোটরসাইকেলে সেখানে হাজির হন মোবারক নামের আরও এক যুবক। প্রথমে মামুন বিএনপি কর্মী সাইফ হোসেন মুন্নাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দেন। পরে মোটরসাইকেল থেকে নেমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শুভ বেধড়ক কোপানো শুরু করে। এসময় আক্রমণকারী যুবকের পড়নে ছিল কালো পাঞ্জাবি এবং হেলমেট।
প্রাণ বাঁচাতে দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করলে মুন্নাকে অন্য সন্ত্রাসীরা মারধর করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মুন্নার হাত ও পায়ে ব্যাপক জখম হয়েছে। তার শরীরে অসংখ্য কোপের দাগ রয়েছে। দুর্বৃত্তরা মুন্নাকে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সেন্ট্রাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেলে। বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মুন্না।
সূত্রের দাবি, এমসি শুভ এলাকায় কিশোর গ্যাং পরিচালনা, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। একসময় কলাবাগান থানা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন। বর্তমানে যুবদলের কমিটি নেই। কিছুদিন আগে কলাবাগান থানা পুলিশ তাকে আটক করে। পরে তার অনুসারীরা থানায় হামলা করে শুভকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহ আলম সৈকতের অনুসারী এই শুভ। তার নেতৃত্বেই তিনি এলাকায় নানান অপকর্মে জড়িত।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, মামুনসহ যারা মুন্নাকে কুপিয়েছে সবাই বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীমের অনুসারী। তবে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ব্যারিস্টার অসীম কালবেলাকে বলেন, যারা এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে তাদের সঙ্গে আমার বা দলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি- তারা দলের কেউ না। সর্বোচ্চ আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এদিকে কলাবাগান থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহ আলম সৈকত বলেন, আক্রমণকারীরা বিএনপির কেউ না। দলের নাম ভাঙিয়ে যারা এসব অপকর্ম করছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আমি থানা পুলিশকে বলে দিয়েছি এই ঘটনায় যাতে দ্রুত মামলা হয়।
ডিএমপির নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তারিক লতিফ কালবেলাকে বলেন, ঘটনার পরপর তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছেন। এই ঘটনায় অপরাধীরা আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। মামলা হলে পুলিশ আসামিদের আইনের আওতায় আনবে।
মন্তব্য করুন