চট্টগ্রামে সরকারি কমার্স কলেজের সামনে ছাত্রশিবিরের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম দক্ষিণ শাখা।
এসময় তারা জানান, ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।
শনিবার (৩১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আব্দুল খালেক মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানায়।
এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি।
এর আগে দুপুর ১১টার দিকে কমার্স কলেজের সামনে তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রদল।
লিখিত বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির কমার্স কলেজ শাখা সকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাইচ্ছুকদের জন্য হেল্প ডেস্ক এবং অভিভাবক ছাউনি তৈরি করে। শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যাগ ও অন্যান্য সামগ্রী হেল্প ডেস্কে রাখে। বেলা ১১টার দিকে ছাত্রদলের কর্মীরা সেখানে গিয়ে আমাদের ভাইদের ওপর হামলা চালায়। এসময় আমাদের চারজন ভাই আহত হয়েছেন।
কেন হামলা চালিয়েছে জানতে চাইলে ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, হামলাকারীরা বলছিল আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই তোমাদেরও কোনো কর্মসূচি হবে না। এটাই তাদের মূল বক্তব্য ছিল। কিন্তু ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি গতকাল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ছিল। সেই উপলক্ষে কমার্স কলেজের ভেতরে তারা (ছাত্রদল) ছাত্রদের নিয়ে মিলাদ-মাহফিল করেছেন। আমরা যখন সেখানে কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের কাছে অনুমতি চেয়েছি, আমরা পাইনি। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ যেন থাকে এবং আমাদের সঙ্গে যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য আমাদের আজকের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে কলেজের বাইরে।
রনির দাবি, শিবির বরাবরই ছাত্রবান্ধব এবং গঠনমূলক কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কলেজের বাইরে আমাদের হেল্পডেস্ক ও অভিভাবক ছাউনি তৈরি করেছি। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, দেশব্যাপী ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট এবং ছাত্রসংসদ নির্বাচন বিলম্ব করতে ইতোমধ্যে বাম সংগঠন-ছাত্রদল একত্রিত হয়ে নানামুখী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে সরকারি কমার্স কলেজে সামনে ছাত্রদলের কর্মীরা মাথায় দলীয় টুপি পরে হামলা চালিয়েছে।
হামলার নেপথ্যের কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অচিহ্নিত কোনো ব্যক্তি বা ছাত্রদল অস্বীকার করতে পারতো তাদের কর্মী না। সেখানে তারা সুসজ্জিত হয়ে মাথায় তাদের দলীয় ক্যাপ পরে এসেছে। আমাদের দাবি হচ্ছে- ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।
হামলার ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে ইব্রাহিম বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর আমাদের চট্টগ্রামে এই সর্বপ্রথম ছাত্রশিবিরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অবশ্যই আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিটি নাগরিকের আইনি সহযোগিতা পাওয়া দরকার। এ ব্যাপারে আমরা আইনের দ্বারস্থ হবো, ইনশাআল্লাহ্। এরই মধ্যে আমাদের যারা আহত হয়েছেন, চারজনের মধ্যে একজন মোজাহেরুল ইসলাম ভাই। আমরা মনে করি, তাদের আইনের যে সহযোগিতা পাওয়া দরকার তা পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখার সেক্রেটারি মাইমুনুল ইসলাম মামুন, বায়তুলমাল সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম, সাহিত্য সম্পাদক বাহাউদ্দিন, শিবির মহানগর দক্ষিণ কলেজ শাখার সম্পাদক মোজাহেরুল ইসলাম ও অন্যান্য দায়িত্বশীল নেতাকর্মীরা।
মন্তব্য করুন