শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যেই ওয়াসিমরা শহীদ হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম বিপ্লব উদ্যান সংলগ্ন দক্ষিণ সড়কে জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদ ওয়াসিম আকরামসহ সব শহীদদের বীরত্বগাথা স্মরণে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ছাত্রদলের উদ্যোগে ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ওয়াসিম আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছিল- ‘চলে আসুন ষোলশহর’। বিরোধীদলের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার কারণে ওয়াসিমের চাকরি পাওয়ার সুযোগ ছিল না। সেদিন ফ্যাসিবাদের পতনের লক্ষ্যে ওয়াসিমসহ তানভীর সিদ্দিকী ও হৃদয়রা শহীদ হয়েছিল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তাদের আত্মার মাগফিরাত ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
তিনি বলেন, আজ গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জুলাইয়ের এই দিন সাঈদ-ওয়াসিমদের শহীদ দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রাষ্ট্র কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করেনি। আজকের এই দিনে গোপালগঞ্জে যাওয়া এনসিপির কতটা যুক্তিসংগত তা জনগণের কাছে আমাদের প্রশ্ন। দেশের সৎ ও সাহসী প্রশাসনিক লোকজনকে জামাতের পরামর্শে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে সরিয়ে আওয়ামী উচ্ছিষ্টভোগীদের পদায়ন করা হয়েছে। তাই আইনশৃঙ্খলার অবনতি বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
নাছির আরও বলেন, একুশ শতকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন করছি। কিছুদিন আগে চুয়েটে ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটিকে কেন্দ্র করে গুপ্ত সংগঠন সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে মববাজি করেছিল। সেইসঙ্গে চুয়েট উপাচার্য মববাজির পক্ষ নেওয়ায় আমি নিন্দা প্রকাশ করছি। কেউ প্রকাশ্য রাজনীতিতে এলে আমরা স্বাগত জানাব। কিন্তু গুপ্তভাবে কোনো অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে ষড়যন্ত্র করলে ছাত্রদল তা শক্তভাবে মোকাবিলা করবে।
নাসির বলেন, জামায়াতের ড. শফিকুল ইসলাম আওয়ামী সন্ত্রাসীদের স্টাইলে বিএনপির উদ্দেশে বক্তব্য রাখছেন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অযৌক্তিকভাবে যে অশ্লীল কটূক্তি করা হয়েছে, আমরা মনে করি অবিলম্বে তারা ভুল স্বীকার করবে। শিবিরের নেতাকর্মীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তাদের সম্পৃক্ততার উল্লেখযোগ্য ডকুমেন্ট দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশের সব প্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন করবে ছাত্রদল। কেউ বাধা প্রদান করলে তার সমুচিত জবাব দিতে ছাত্রদল প্রস্তুত রয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়া বলেন, দলীয় পরিচয়ে ওয়াসিম শহীদ হয়েছিল। অথচ তার ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম কলেজে নিয়মিত মববাজি করা হচ্ছে। একটি সংগঠন একাত্তরকে পকেটস্থ করে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। আরেকটি সংগঠন ২৪ -এর গণঅভ্যুত্থানকে পকেটস্থ করার অপচেষ্টা করছে। তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কুসুম কুসুম প্রেম করে আজ হামলার শিকার হয়েছে। তারা গুম থেকে ফিরে আসা সালাউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে অশ্লীল কটূক্তি করছে, যা তাদের অপরিপক্বতার বহিঃপ্রকাশ। দেশের সরকারকে কোনো দায় না দিয়ে সব দোষ তারেক রহমানকে দেওয়া হচ্ছে। সরকার শুধু ভালোগুলোর দায় নিচ্ছে। যাকে বলা হয় পাওয়ার উইথআউট রেসপনসিবিলিটি।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি ইজাজুল কবির রুয়েল, ঢাবি ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন শাওন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি তকিবুল হাসান চৌধুরী তকি, সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন রুবেল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবি, সদস্য সচিব কামরুদ্দিন সবুজসহ চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাধীন সব জেলা, উপজেলা ও থানা এবং কলেজ ছাত্রদল নেতারা।
মন্তব্য করুন