গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেছেন, গোপালগঞ্জে সকালে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও দুপুরে এনসিপির সমাবেশস্থলে ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করেছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ। আমরা এই হামলার নিন্দা জানাই। পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে এমন হামলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আওয়ামী লীগ এতদিন সুখে ছিল, আজকের হামলার পর এই মাশুল আওয়ামী লীগকে দিতে হবে। ছাত্র-জনতা সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সারা দেশে আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন করার অভিযান চালাতে হবে।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে কিশোরগঞ্জ শহরে গণপদযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে গণহত্যার বিচার ও গণহত্যায় জড়িত ফ্যাসিস্টদের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ এবং রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে গণপদযাত্রা করেছে গণঅধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা।
এ সময় তিনি বলেন, আজ সেই ঐতিহাসিক ১৬ জুলাই। রংপুরে আবু সাঈদ, চট্টগ্রামে ওয়াসিমরা এই দিনে পুলিশের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। তাদের সেই ত্যাগের ফলে এই আন্দোলন আরও বেগবান হয় যোগ হয় নতুন মাত্রা, যার শেষ পরিণতি ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন। বাংলাদেশের ৫৩ বছরের রাজনৈতিক ধারার পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সংস্কারের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতিও নেই। এখনো পরাজিত শক্তি আওয়ামী লীগ বিভিন্ন জায়গায় গুপ্ত হামলা করছে, এর জন্য দায়ী প্রশাসনের নীরবতা। জুলাই গণহত্যায় জড়িত অসংখ্য আসামি ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়ে গেছে। জুলাই গণহত্যার বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের ক্ষমতার কথা চিন্তা করে জুলাই শহীদদের ত্যাগের কথা ভুলে গেছে। দলগুলো নিজেদের ক্ষমতার লড়াই একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলছে। রাজনীতিতে এটা স্বাভাবিক বিষয়। ভিন্ন মত থাকবে, প্রতিযোগিতা থাকবে কিন্তু সেটা যেন সংঘাতে রূপ না নেয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর এই বিরোধে পরাজিত শক্তি সুযোগ নিতে পারে। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি করা যাবে না, যাতে আওয়ামী লীগ ফিরে আসার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমাদের জুলাইয়ের ঐক্যের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ১ বছর হলেও এখনো জুলাই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
নির্বাচন নিয়ে আবু হানিফ বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আগামীর নির্বাচন হবে ব্যতিক্রম। এই নির্বাচনে বড় একটা অংশ তরুণ ভোটার রয়েছে, এই তরুণ ভোটার আগামীর নির্বাচনে ভোটের হিসাব পাল্টে দেবে। দেশের মানুষ গতানুগতিক রাজনীতির পরিবর্তন চায়। বিগত সময়ে যারা দেশ শাসন করেছে তাদের চরিত্র কেমন জনগণ তা জানে। ক্ষমতা ও পেশিশক্তির রাজনীতি জনগণ আর দেখতে চায় না। আগামী নির্বাচনে চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের প্রত্যাখ্যান করবে জনগণ।
গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মোখলেছুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, এক বছরেও গণহত্যার আসামিদের আটক করা হয়নি, এর দায় প্রশাসন কোনোভাবে এড়াতে পারে না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে এর দায় নিতে হবে। আওয়ামী লীগকে বিচারের আগে বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।
গণঅধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলার সহসভাপতি শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক অভি চৌধুরী, সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ, মাসুদুল ইসলাম সোহেল, আলহাজ শামসুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ কাজল, ইমরান হাসান, অর্থ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাহফুজ, সহ-আইন সম্পাদক ফজল মোল্লা, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি সোহাগ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ রমজান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ইমন খান, সাধারণ সম্পাদক পায়েল চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক প্রমুখ।
মন্তব্য করুন