চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঋণের নামে লুট, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক যেন এস আলমের ‘এটিএম’ মেশিন

ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স
ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার নামে হাজার হাজার কোটি টাকা কীভাবে বছরের পর বছর ফেরত না দিয়েও পার পেয়ে গেল একটি শিল্পগোষ্ঠী— সে প্রশ্নই সামনে আনছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সর্বশেষ মামলা। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিত এস আলম গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সোয়া ছয় হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিনটি মামলা করেছে সংস্থাটি।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুদকের চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ে দায়ের করা এসব মামলায় গ্রুপটির কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং জনতা ব্যাংকের অন্তত ৮৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ ওঠে, ঋণের নামে অর্থ তুলে নিয়ে তা সুদে-আসলে ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

দুদকের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ জানান, তিন প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ঋণের মোট অঙ্ক ৬ হাজার ২৪৩ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার টাকা।

দুদকের মামলার নথি অনুযায়ী, প্রথম অভিযোগটি এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডকে ঘিরে। ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ে জনতা ব্যাংক থেকে বিভিন্ন উপায়ে ঋণ নিয়ে সুদে-আসলে ২ হাজার ৩ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৩০৮ টাকা ২৩ পয়সা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ মামলায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে দেখানো ফারজানা পারভীনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল আলম রয়েছেন দ্বিতীয় আসামি হিসেবে। পাশাপাশি জনতা ব্যাংকের ২৮ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলাটি এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড সংক্রান্ত। অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ঋণ নিয়ে সুদে-আসলে ২ হাজার ২৯৭ কোটি ৭৪ লাখ ৭১ টাকা ৫ পয়সা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এ মামলায় সাইফুল আলমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছেন জনতা ব্যাংকের ২৫ কর্মকর্তা।

তৃতীয় মামলায় এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ২০০৫ সালের ১০ মে থেকে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ঋণ নিয়ে সুদে-আসলে ১ হাজার ৯৪২ কোটি ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ৫৯৩ টাকা ৬১ পয়সা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে মোট ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, ঋণ অনুমোদন থেকে বিতরণ এবং পরিশোধ তদারকির প্রতিটি ধাপে কীভাবে অনিয়ম হয়েছে তা তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে।

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর সুগার মিল ও সুপার এডিবল মিলের নামে ৩ হাজার ৮৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুটি মামলা করে দুদক। সর্বশেষ তিন মামলার মধ্য দিয়ে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্তের পরিধি আরও বিস্তৃত হলো।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভারতকে নাকানিচুবানি খাইয়ে এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের নিন্দা

কনকনে শীতে জবুথবু রাজশাহীর জনজীবন, বাড়ছে দুর্ভোগ

কোরআনের হাফেজদের কাছে দোয়া চাইলেন হাবিব

এসইউবির সমাবর্তনে স্বর্ণপদক পেলেন রিতু

৮ বিভাগে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল গঠন, প্রজ্ঞাপন জারি

ওসমান হাদি দেশের জন্য নির্ভীক পথপ্রদর্শক : আইন উপদেষ্টা

বাংলাদেশের শিক্ষা-গবেষণার মানোন্নয়নে কাজ করতে চায় বিডিপিএফ

এক সপ্তাহে সৌদি আরবে ১৭ হাজার প্রবাসী গ্রেপ্তার

বিএনপি নেতার ঘরে অগ্নিসংযোগ / হাসপাতালে কাতরাচ্ছে দগ্ধ বাবাসহ দুই বোন, হয়নি মামলা

১০

উঠানে বাবার মরদেহ, সম্পত্তির দাবিতে দাফন কাজে সন্তানদের বাধা

১১

দিল্লির বিবৃতি প্রত্যাখ্যান ঢাকার

১২

ই-রিটার্ন ব্যবস্থায় যুক্ত হবে ব্যাংকিং তথ্য : এনবিআর চেয়ারম্যান

১৩

নীরবে মদের বিক্রি বাড়াচ্ছে সৌদি আরব

১৪

ঢাকা দক্ষিণ সিটি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ

১৫

বিএনপিকে যে পরামর্শ দিলেন গণমাধ্যমের কর্তাব্যক্তিরা

১৬

জকসু নির্বাচনে অনিক দাসকে বয়কটের ঘোষণা

১৭

ঋণের নামে লুট, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক যেন এস আলমের ‘এটিএম’ মেশিন

১৮

রায় ঘোষণার পর নতুন বার্তা ইমরান খানের

১৯

প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

২০
X