আলহাজ্ব শামসুর রহমান বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা শিল্পপতি ছিলেন। চামড়া ও পাদুকা খাতে চল্লিশ বছরের বেশী অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এ পথিকৃৎ ১৯৪২ সনের ১ এপ্রিল শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার গর্বিত পিতা আলহাজ্ব খলিলুর রহমান এবং মাতা সফুরা বেগম এলাকায় সমাজসেবী ও অত্যন্ত দানশীল ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
আলহাজ্ব শামসুর রহমান বে গ্রুপ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। অত্যন্ত প্রতিভাবান ও পরিশ্রমী এ ব্যক্তিত্ব ১৯৭৩ সনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। ক্যারিয়ারের প্রথমভাগে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে ১৯৭৭ সালে বে ট্যানারিজ লিঃ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার কর্মজীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করেন, যা বর্তমানে বে গ্রুপ হিসেবে মহীরুহে বিকশিত হয়েছে।
তিনি বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সংস্থার সহসভাপতি এবং বাংলাদেশ ফিনিশড্ লেদার, লেদার গুডস্ ও ফুটওয়ার এক্সপোর্টারস্ এসোসিয়েশন এর উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ পাদুকা খাতে ষোল বার জাতীয় রপ্তানি ট্রফি লাভ করেন।
তিনি একজন দানবীর ছিলেন। দেশের দরিদ্র জনসাধারণের শিক্ষা ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের ক্ষেত্রে তার অপরিসীম অবদান অনস্বীকার্য। পল্লীগ্রাম এবং অনগ্রসর এলাকায় তিনি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, হাসপাতাল ও অনেক দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় অবস্থিত সরকারি শামসুর রহমান কলেজের তিনি প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়াও তিনি সেখানে তার মায়ের নামে সফুরা বেগম মহিলা কলেজ, সামন্তসার উচ্চবিদ্যালয়, পিতা-মাতার নামে খলিলুর রহমান ফাজিল মাদ্রাসা, সফুরা বেগম শিশু সদন এবং ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে গাউছিয়া ফাজিল মাদ্রাসা স্থাপন করেন।
তিনি তিন পুত্র ও দুই কন্যার গর্বিত পিতা, যারা সমাজে অত্যন্ত সুপ্রতিষ্ঠিত।
তিনি গত ১৩ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন।
তিনি স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, পুত্রবধু, জামাতা, নাতী নাতনীসহ অসংখ্য আত্নীয় স্বজন, গুণগ্রাহি ও বে পরিবারের সদস্যরাকে শোকসাগরে ভাসিয়ে ইন্তেকাল করেন। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
মন্তব্য করুন