ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

হুমকিতে শহর রক্ষা বাঁধ, একরাতে বিলীন ডজনখানেক বাড়িঘর

পদ্মার ভাঙনে একের পর এক বিলীন বসতবাড়ি। ছবি : কালবেলা
পদ্মার ভাঙনে একের পর এক বিলীন বসতবাড়ি। ছবি : কালবেলা

ফরিদপুরে পদ্মা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ধলার মোড়ের কাছে পালডাঙ্গীতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। একরাতের মধ্যেই শহর রক্ষা বাঁধসংলগ্ন দশ-বারোটি বসতবাড়ি ধসে গেছে।

শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের পালডাঙ্গীতে বাঁধসংলগ্ন বাসিন্দারা ঘরবাড়ি হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেকের রান্নাঘর ভাঙনে বিলীন হওয়ায় তারা নিত্যকর্মও সারতে পারছেন না। বাড়িতে রান্নাবান্না করতে না পারায় এসব পরিবার সারাদিন নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে ঘরের মালামাল সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এর আগে একই দিন ভোরে ভাঙনের কবলে পালডাঙ্গী এলাকার ১০-১২টি বসতবাড়ি ধসে যায় বলে জানা যায়।

এদিকে শহর রক্ষা বাঁধের সন্নিকটে পদ্মা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে গড়ে করা হয়েছে বিশাল মজুদ।

স্থানীয়রা জানান, প্রথমে ভেকু দিয়ে শহর রক্ষা বাঁধ ঘেঁষে প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ ফুট গভীর করে বালু তুলে মজুদ করা হয়। এরপর ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে ভেকু দিয়ে ওই বালি ট্রাকে করে বিক্রির সময় শহর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় পানির ঘূর্ণি স্রোতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়। এতে মাঝরাত হতে ভোর হওয়ার আগেই আফজাল শেখ, মজলু শিকদার, মো. হাসান মাস্টার, বাদশা শেখ, সাহেব শেখ, আলী, দেলোয়ার শেখ, সাদ্দাম শেখ, সালাম শেখ, জাহানারা বেগমের ঘরবাড়ি নদীর পানিতে ধসে যায়।

ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানো মো. হাসান মাস্টার বলেন, ৮৮ সালের বন্যার সময় পদ্মা নদীতে ঘরবাড়ি হারানোর পরে আমরা এই বেড়িবাঁধের পাশে সরকারি জমিতে আশ্রয় নিই। এরপর স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই আমরা এখানে ঘরবাড়ি তুলে বসবাস করছি। কিন্তু এখানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। সেই ভাঙনে আমাদের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদি হাসান মিন্টু ফকির বলেন, অনেকদিন ধরে বালুখেকোরা মানুষের ক্ষতি করছে। যখন আমরা অভিযোগ দিই, তারপর দুই তিনদিন হয়তো বন্ধ থাকে। পরে আবার শুরু হয়। তবে এবার তারা যা করছে তাতে বেড়িবাঁধ ধসে গেছে। আর মাত্র চার-পাঁচ ফুট ভাঙলেই শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন ধরে যাবে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা কালবেলাকে বলেন, খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলা হবে। আর সেখানে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু বন্ধ করতে হবে : মির্জা ফখরুল 

গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ অনুষ্ঠিত

শেখ হাসিনার স্টেট ডিফেন্স আমিনুলকে সরিয়ে দিলেন ট্রাইব্যুনাল

ইসরায়েলের হয়ে কাজ করা ৭০০ ভাড়াটে সৈনিক গ্রেপ্তার

বৈষম্যবিরোধী ছেড়ে ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দিলেন ৩ নেতা

আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে বাংলাদেশকে সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয় : তারেক রহমান

এক ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না : বিএনপি

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করল ইরান

সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার

রাইস কুকারে রান্নার সময় কোলের শিশুসহ মায়ের মৃত্যু

১০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুল ছেঁড়া নিয়ে সংঘর্ষ

১১

গণসংহতি আন্দোলনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা

১২

উপদেষ্টা আসিফকে ক্ষমা চাইতে হবে : ইশরাক হোসেন

১৩

উপবৃত্তির নামে চাওয়া হচ্ছে পিন-ওটিপি, সতর্ক করল শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট

১৪

সৌরভ গাঙ্গুলীর চরিত্র নিয়ে নার্ভাস রাজকুমার

১৫

ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের

১৬

কলম্বোতে দুই উইকেট হারিয়ে লাঞ্চে বাংলাদেশ

১৭

পিলখানা হত্যাকাণ্ড / পালিয়ে থাকা নানক ও আজম ইমেইলে সাক্ষ্য দিয়েছেন : তদন্ত কমিশন

১৮

বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে ২২ লাখ টাকার মালপত্র লুট

১৯

এনসিপি নেতা ও তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

২০
X