দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরশহরের ত্রিমহনীঘাট, হিন্দুপাড়া, কুমারপাড়া, জেলেপাড়া ও হঠাৎপাড়া এলাকায় করতোয়া নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি, ফলের বাগান ও নানা স্থাপনা। নদী তীরবর্তী এসব এলাকার অর্ধশত পরিবার জমিজমা, ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। আশ্বাসের পর আশ্বাস মিললেও হয়নি কোনো সুরাহা।
প্রতি বছর নদীতে পানি কমা এবং বাড়ার সময় এ নদীর ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। কিন্তু অদ্যবধিও এ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে প্রতি বছরই নদীভাঙনের শিকার হচ্ছেন এসব এলাকায় বসবাসরতরা। নদীভাঙন রোধে নদীর পার দিয়ে স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
সরেজমিনে নদীভাঙনকবলিত ওই সব এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পৌরশহরের নদী তীরবর্তী অর্ধশত পরিবার ভাঙনের কারণে তাদের ভিটেবাড়ি হারিয়ে পাশের এলাকায় টংঘর অথবা অন্য কোনো আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।
ভাঙন কবলিত মিলন বালা (৬৫) বলেন, ‘বাবা হামার ঘোরক নদী ভাঙন থেকা বাঁচান। হামরা সবাই শেষ হয়া গেনু। এ বয়সে হামি কোটে যামো। হামার তো আর থাকার জায়গা নাই।’
আরেক বাসিন্দা দিলো (৬২) আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘প্রত্যেক বছর নদী ভেঙে যাচ্ছে। কেউ পদক্ষেপ নেয় না। এমপির কাছে যাই, এমপি আশা দেয়। মেয়রের কাছে যাই, মেয়র আশা দেয়। ইউএনওর কাছে যাই, ইউএনও কয় হবে হবে, আর মেয়র বলে এটা আমাদের হাতে নয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাতে। আমাদের সুব্যবস্থা কেউ করে না।’
ঘোড়াঘাট পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন জানান, তার পৌরশহরের নদীতীরের মানুষের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে করতোয়ার ভাঙন। নদীর অব্যাহত ভাঙনে দিনে দিনে দীর্ঘ হচ্ছে নিঃস্ব মানুষের তালিকা।
তিনি বলেন, এর আগে এমপি ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। তাছাড়া আমি ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছি না।
দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ কালবেলাকে বলেন, যেহুতু এটা নদীভাঙন, আমাদের কাজেই হলো এসব কাজ করা। আমি যাচাই-বাছাই করে, পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মন্তব্য করুন