কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০৩:১৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

রাস্তায় ৭ ঘণ্টা পড়ে ছিল আ.লীগ নেতা হারাধনের মরদেহ

নিহত আ.লীগ নেতা হারাধন। ছবি : সংগৃহীত
নিহত আ.লীগ নেতা হারাধন। ছবি : সংগৃহীত

রংপুরে ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা এবং তার গাড়িচালক কমল নিহত হন। এরপর তাদের লাশ সিটি বাজারের সামনে রাস্তার ওপর পড়ে ছিল প্রায় সাত ঘণ্টা। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এবং অন্য কাউন্সিলররা গিয়ে লাশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে নগরীর পুষ্টির মোড়ে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের। প্রথমে জাহাজ কোম্পানি মোড় ও পায়রা চত্বরে দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এরপর পুষ্টির মোড়ে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ কর্মীরা। জাহাজ কোম্পানি, মিঠুর গলি আর সিটি বাজারে অবস্থান নিয়ে ছিলেন আন্দোলনকারীরা। তিন দিকে সংঘর্ষ

শুরু হলে হারাধনকে প্রথম পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে তাকে টেনেহিঁচড়ে আনা হয় পায়রা চত্বরে। ততক্ষণে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পিছু হটে। এই সময়ের মধ্যে সড়কেই তার মৃত্যু হয়। বিক্ষুব্ধরা গলায় ইন্টারনেটের তার ও রশি বেঁধে টেনেহিঁচড়ে নেয় সিটি বাজার ওভারব্রিজের সামনে। সেখানে তাকে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু না পেরে সড়কে ফেলে রাখা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হারাধনের সঙ্গে তার গাড়িচালক কমলকেও বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাদের মাথা, মুখ, পেট ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃত্যুর পর উল্লাস করে হত্যাকারীরা; এমনকি লাশের ওপর জুতা নিক্ষেপ করে। সড়কের ওপর যখন তাদের লাশ পড়ে ছিল, তখনও আন্দোলনকারীরা আজাদ হোমিও হলের সামনে অবস্থান নিয়েছিল। এ কারণে কেউ লাশ নিতে আসেননি। সন্ধ্যার দিকে আন্দোলনকারীরা সরে গেলে লাশ উদ্ধার করা হয়। সন্ধ্যায় হারাধনের স্ত্রী কৃষ্ণা রানী বলেন, ‘হারাধন তিনবারের কাউন্সিলর। সে জনপ্রিয় মানুষ ছিল। এলাকায় তার অনেক জনপ্রিয়তা থাকায় মানুষ তাকে বারবার ভোটে নির্বাচিত করেছিল।’ তিনি বলেন, ‘যারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।’ হারাধনের ১০ বছর বয়সী এক ছেলে ও চার বছরের এক মেয়ে রয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, ‘টেকনিক্যালি আমরা দিনে লাশ উদ্ধার করতে যাইনি। আমরা চাইনি একটি লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে আরও লাশ পড়ুক। কারণ, ওদের (আন্দোলনকারীদের) টার্গেট পুলিশ ও আওয়ামী লীগ।’ তিনি বলেন, আমরা সেখানে গেলে হয়তো আরও বড় ধরনের সংঘর্ষ হতো। তখন আমাদের অস্ত্র ব্যবহার করতে হতো। তাতে আরও বেশি লাশ পড়ত।

সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘আমি ওসি এবং নগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাকে ফোন করেছিলাম; তারা বলেছিল পরিস্থিতি ভালো না হলে আমরা যেতে পারব না। কিন্তু আমি মানবিক কারণে গেছি। দুজন মানুষের লাশ দুপুর থেকে পড়ে আছে। আমি গিয়ে লোকজনকে সরিয়ে দিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বুর্জ খলিফার চূড়ায় বজ্রপাত, ভিডিও ভাইরাল

হাদির মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি : ঢাবি সাদা দল

বহিষ্কারের পরদিন জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির ২ নেতা

ভুলভাবে চিয়া সিড খাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনছেন ক্যানসারের ভয়

আর্জেন্টিনা-স্পেনের ‘ফিনালিসিমা’ কবে, কখন, কোথায়

যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা, সব আরোহী নিহত

বুলডোজার দিয়ে আ.লীগ অফিস গুঁড়িয়ে দিল ছাত্র-জনতা  

সবার আগে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল পাকিস্তান

ফেসবুকে হত্যার হুমকি / ‘হান্নান, আগুন নিয়ে খেলা করো না’

ওসমান হাদির মৃত্যুতে বিসিবি-বাফুফের শোক

১০

ইউজিসির নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

১১

সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হেনস্তা

১২

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

১৩

ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান পড়া স্বাভাবিক নাকি কোনো রোগের ইঙ্গিত

১৪

দ্রুত বিচার না হলে এনসিপি কঠোর কর্মসূচিতে যাবে : আকতার হোসেন 

১৫

আজ যেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া

১৬

হাদির প্রথম জানাজা কোথায়, জানাল ইনকিলাব মঞ্চ

১৭

টানা ৯ দিন তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রির ঘরে

১৮

ইলেকট্রিক কেটলি ব্যবহারের এই ৫ ভুলে হতে পারে বড় ক্ষতি

১৯

বাংলাদেশ ব্যাংকের শুক্রবারের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত

২০
X