বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে মানুষের মনে স্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষার্থীদের হাতের ছোঁয়ায় বিভিন্ন লেখনী ও গ্রাফিতির অঙ্কনে সেজে উঠছে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা। এসব ছবিতে ফুটে উঠছে আন্দোলনে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থীদের রক্তে রঞ্জিত ইতিহাস।
গ্রাফিতিতে বৈষম্য, স্বৈরাচারবিরোধী, গণতন্ত্র পুনর্গঠন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণের চাওয়া ও জানা-অজানা বীরদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র মায়াবী মুগ্ধের সেই ডাক, পানি লাগবে, পানি? বীর শহীদ আবু সাঈদের প্রতিচ্ছবিও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কেআর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, হাসপাতাল মোড়, চরজাজুরিয়া, চৌহালী সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন স্থানে গ্রাফিতি অঙ্কন করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের রং-তুলির আঁচড়ে করা ক্যালিওগ্রাফি-গ্রাফিতিতে চোখ আটকে যাচ্ছে শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ সবার। রোদে এক হাতে রঙয়ের কোটা, অন্যহাতে তুলি। চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস শিক্ষার্থীদের। অপরিচ্ছন্ন প্রতিটি দেওয়াল কালো, সাদা, লাল, নীল, হলুদসহ নানা রঙে জল তুলির আঁচড়ে রাঙাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের কারও হাতে ছিল রঙ-তুলি, আবার কেউ কেউ একে অপরকে পান করাচ্ছেন পানি। অনেকেই আবার দেখিয়ে দিচ্ছেন কোথায় কি রং, কোন ক্যালিওগ্রাফি করবেন। সবার চোখেমুখেই যেন ছিল বিজয়ের হাসি।
শিক্ষার্থীরা জানান, দেশটা আমাদের সবার। দেশ যেহেতু আমরা স্বাধীন করেছি সেহেতু এ দেশের প্রতিটি স্থাপনা রক্ষা ও এসবের সৌন্দর্য রক্ষার দায়িত্বও আমাদের। এখন থেকে আগের সবকিছু ভুলে আমাদের নয়া উন্মাদনায় দেশ গড়তে হবে। দেশের হয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।
মো. মাহিম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে শান্তিপূর্ণভাবে চৌহালীতে আমরা দেয়াল লেখনের কাজ করছি। এখানে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার ভাইদের ওপর যে নির্যাতন করা হচ্ছে সেই বিষয় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সারা দেশের মধ্যে চৌহালী একটি অবহেলিত উপজেলা। যমুনার ভাঙনে বিধ্বস্ত এ উপজেলাটি নদী ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ ও শিক্ষার মান উন্নয়নসহ প্রতিটি সেক্টরে বিশেষ নজর দেওয়ার দাবি জানাই।
মন্তব্য করুন