পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে নিজ বাড়িতে মা ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল থেকে নবিন ইসলাম (২৩) নামে যুবককে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিম। প্রাথমিকভাবে নবিন হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আটককৃত নবিন উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের দলুয়া কুড়ুলিয়া গ্রামের ফজলারের ছেলে।
স্থানীয় মাজেদুর রহমান নামে একজন জানান, ধৃত নবিন একই এলাকার ফজলারের ছেলে। সেলিম উদ্দিনের বাড়ি আশপাশে তেমন কোনো ঘরবাড়ি নেই। পার্শ্ববর্তী বোদা বাজারে তার একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। সেই সুবাদে সেলিম সারাদিন দোকানেই থাকে। তার বাড়ির পূর্ব পাশে মুরগির খামারের একটি পরিত্যক্ত ঘর আছে। জায়গাটি নিরিবিলি হওয়ায় সেখানে প্রায়ই সময়ে নবিন তার বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে মাদক সেবন করত। এ নিয়ে সেলিম তাদের বেশ কয়েকবার বাধাও দেয়। তাতে কোনো কাজ হয়নি। সর্বশেষ খামারের বসে মাদক সেবন করায় কিছুদিন পূর্বে সেলিম তাদের বাধা দিয়েছিল। এতে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ওই বাকবিতণ্ডা ও দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হতে পারে বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী।
আটোয়ারী থানার ওসি মো. মুসা মিয়া কালবেলাকে জানান, গতকাল রাতে ট্রিপল খুনের ঘটনার পর থেকেই আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রকৃত খুনিদের ধরতে মাঠে নামে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, আহত অবস্থায় ওই গ্রামের একজন বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার নিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি জানান, পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে তাকে আটকের পর জিজ্ঞেসাবাদ করলে প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করে। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে খুনের কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তিনি আটোয়ারী থানা পুলিশের হেফাজতে আছে এবং কিলিং মিশনের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গতকাল রাতে সেলিম পার্শ্ববর্তী বোদা বাজারে তার কাপড় দোকান বন্ধ করে বাড়িতে আসেন। এ সময় বাড়ির ড্রয়িং রুমের দরজা খোলা দেখে কাছে গিয়ে ফ্লোরে স্ত্রী ও দুই সন্তানের রক্তাক্ত মরদেহ দেখে চিৎকার করতে থাকেন। দ্রুত প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে আটোয়ারী থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আটোয়ারী ইউএনও মো. শাফিউল মাজলুবিন রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মন্তব্য করুন