জামালপুরে সরিষাবাড়ীতে এক বহুরূপী প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে জামালপুর সদর থানায় প্রতারণাসহ ধর্ষণের একাধিক মামলা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) ভুক্তভোগী হেলালের স্ত্রী জোসনা বেগম বাদী হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় একটি প্রতারণার অভিযোগ করলে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ তাকে কৌশলে গ্রেপ্তার করে এবং তার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠায়।
আরও পড়ুন : সেবাপ্রার্থীকে জুতাপেটা করল পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রতারক ওবায়দুর রহমান ও তার সহযোগী জিয়াউল হক ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে জামালপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিজেরাই ঘটক, পাত্র ও পাত্রের মামা সেজে এবং মোবাইল ফোনে কণ্ঠ নকল করে বিভিন্ন বিবাহযোগ্য মেয়ের বাবা ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে যায়।
মেয়ের পরিবারকে তারা বলে ছেলে উচ্চশিক্ষিত এবং সরকারি চাকরিজীবী। কখনো সেনাবাহিনী, কখনো পুলিশের এসআই, কখনো এয়ারপোর্টের কাসটমস অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে মেয়ের পরিবারের সঙ্গে একটি বিশ্বস্ত সম্পর্ক করে তোলে। পরে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ আত্মসাৎ করে এবং মাঝে মধ্যে ভুয়া কাজীর মাধ্যমে বিয়ে দিয়ে মেয়ের পরিবারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।
এমনই একটি ঘটনা গত (৭ জুলাই) সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের ভাটারা গ্রামের হেলাল উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে ঘটে। ভুক্তভোগী পরিবার জানান, প্রতারক ওবায়দুর রহমান ও জিয়াউল হক ভূঁইয়া মামা ভাগিনা সেজে তাদের মেয়েকে দেখতে আসে এবং ছেলেটি সেনাবাহিনীতে চাকরি করে বলে জানায়।
একপর্যায়ে বিবাহের প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে একটি আত্মীয় সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং এই সুযোগে ছেলের একটি জমি বিক্রি করবে কিন্তু খারিজ নেই। এই বলে মেয়ের পরিবারের কাছ থেকে দুই দফায় ৫০ হাজার টাকা নেন তারা। এরপর আরও এক লাখ টাকা দাবি করলে তারা দিতে অস্বীকার করে। এরপর হতেই তাদের মোবাইলটি বন্ধ রাখে। পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ঘটক, ছেলে ও ছেলের মামা সকলেই একই চক্রের লোক।
ওপর দিকে এই প্রতারক চক্রের সদস্য জিয়াউল হক ভূঁইয়া নাম পরিবর্তন করে সরিষাবাড়ীতে একটি বাসা ভাড়া নেয় এবং সেই বাসার আরেক হিন্দু ভাড়াটিয়াকে ব্যাংক থেকে ১৭ লাখ টাকা লোন করে দেওয়ার কথা বলে দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।
এ ছাড়াও হেনা নামে এক মহিলার কাছ থেকে ঘটক সেজে বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী হেলালের স্ত্রী জোসনা বেগম বাদী হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় একটি প্রতারণার অভিযোগ করলে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ তাকে কৌশলে গ্রেপ্তার করে এবং তার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠায়।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার ওসি বলেন, গ্রেপ্তার প্রতারক ওবায়দুর রহমান জামালপুর সদর থানার শরীফপুর ইউনিয়নের রনরামপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ মাস্টারের ছেলে। সে একাধিক কণ্ঠে কথা বলতে পারে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। সরিষাবাড়ী থানায় প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার সহযোগী জিয়াউল হক ভূঁইয়াসহ এ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন