কালবেলা প্রতিবেদক, গাজীপুর
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:০৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ১৩৬ বিডিআর সদস্য

কাশিমপুর কারাগারের ফটকে প্রিয়জনদের জন্য অপেক্ষরতরা। ছবি : কালবেলা
কাশিমপুর কারাগারের ফটকে প্রিয়জনদের জন্য অপেক্ষরতরা। ছবি : কালবেলা

দীর্ঘ ১৬ বছর পর গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারগার থেকে মুক্তি পেলেন বিস্ফোরক মামলায় জামিন পাওয়া ১৩৬ বিডিআর সদস্য। এর আগে বন্দীদের মুক্তির খবরে কারাফটকে ভিড় করেন স্বজনেরা। সেখানে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারগার থেকে তারা মুক্তি পায়। মুক্তি পাওয়া বিডিআর সদস্যরা হারানো চাকরি ফিরে পাওয়া এবং পুনর্বাসনে সরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে কারা ফটকে কথা হয় বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় জামিন প্রাপ্ত গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী এলাকার মামুনের সঙ্গে।

তিনি জানান, যৌবনের শুরুতে চাকরি করতেন বিডিআরে। মাত্র তিন বছর চাকরি জীবন শেষে তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় ২০০৯ সালে গ্রেপ্তার হন তিনি। এরপর দীর্ঘ ১৬ বছর কেটেছে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। জেল জীবনের শুরুতে তার স্ত্রী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। দীর্ঘ দিনপর বাবা মেয়ের মিলন কারা ফটকে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে।

মামুন জানান, শুধু মামুন নয়, তার মত ১৩৬ জন বন্দির জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় কেটেছে কাশিমপুর কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। সকাল থেকে একে একে কারাগার থেকে জামিনে বের হচ্ছেন তারা। নিজেদের হারানো চাকরি ফিরে পাওয়া এবং পুনর্বাসনে সরকারি সহযোগিতা কামনা করেন তারা। এর আগে কেরাণিগঞ্জ ও কাশিমপুর কারাগারে ২২ জানুয়ারি বিডিআর বিস্ফোরক মামলার ১৭৮ আসামির জামিননামা পাঠানো হয়। সেসব জামিননামা যাচাই-বাছাই শেষে অন্য কোনো মামলায় আটকাদেশ না থাকা শর্তে বন্দিদেরকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।

সাবেক বিডিআর বিদ্রোহের আসামিদের মুক্তি দাবি করে বিভিন্ন সময় আন্দোলন করে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ। বিকেলে কারা ফটকে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাজমুল আলম বলেন, বিডিআর বিদ্রোহ ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনায় মিথ্যা মামলা ও ভূয়া আদালতের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বিডিআর সদস্যদের বিচার করেছে যা নজিরবিহীন ও অনৈতিক। এ সময় ১৮টি বিশেষ আদালত বাতিল করে ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যদের পুনর্বাসন ও নিরপরাধ বন্দিদের মুক্তি দাবি করেন তিনি।

গত ২০ জানুয়ারি রোববার বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা বিস্ফোরক মামলায় জামিন পেয়েছেন হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ও যাদের বিরুদ্ধে কোনো আপিল হয়নি এমন ২ শতাধিক আসামি। কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার অস্থায়ী আদালত তাদের এই জামিন দেন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। যেখানে ১৫২ জনের ফাঁসি ছাড়াও ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া খালাস পান ২৭৮ জন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রাক্তনের পাশে বসে বর্তমান প্রেমিকার নামে পূজা

৫ আগস্টের পর থেকে অপুর সঙ্গে যোগাযোগ নেই : উপদেষ্টা আসিফ

কক্সবাজার ইস্যুতে ‘গরম’ ছিল এনসিপির সাধারণ সভা 

সিলেটে পাথর লুটের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

‘মৃত ভোটারদের’ সঙ্গে চা পান করলেন রাহুল গান্ধী

টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস, সন্ধ্যার মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে ঝড়

সাঈদীকে নিয়ে জামায়াত আমিরের বিবৃতি

ট্রেন আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে প্রায় ২০০০ কোটি টাকার প্রশ্ন

গাজীপুরে এক বছরে বন্ধ ১০৬ কারখানা, অপরাধে জড়াচ্ছেন বেকার শ্রমিকরা

১০

সুপার কাপে নাটকীয় জয়ের পরও হতাশ পিএসজি কোচ

১১

ভারত যেন মুখোমুখি না হয় পাকিস্তানের—সাবেক পাক ক্রিকেটারের প্রার্থনা

১২

প্রধান বিচারপতির বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত

১৩

রাশিয়া / উদ্যান রক্ষায় আন্দোলনে নেমেছেন স্থানীয়রা

১৪

হলিউডে অভিনয় করবেন জাহিদ হাসান?

১৫

সেপটিক ট্যাংকের শাটার খুলতে গিয়ে ২ শ্রমিকের মৃত্যু

১৬

দুদকের অভিযানের পরে নড়েচড়ে বসেছে সিলেটের প্রশাসন

১৭

‘অপুকে নির্যাতন করে উপদেষ্টার নাম বলানো হয়েছে’

১৮

হাসপাতালে হিরো আলম

১৯

‘আসছে পানি ভাসছে মানুষ’, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে

২০
X