উয়েফা সুপার কাপে শিরোপা হাতে তুললেও আত্মতুষ্ট নন প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) কোচ লুইস এনরিকে। বুধবার টটেনহ্যামের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর কামব্যাক ও টাইব্রেকারে জয় পেলেও ম্যাচ শেষে সোজাসাপ্টা মন্তব্য তার—‘৮০ মিনিট আমরা জেতার যোগ্য ছিলাম না।’
ইতালির উদিনের স্টাডিও ফ্রিউলিতে ইউরোপের সেরা দুই প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়নদের এই লড়াইয়ে ৮৫ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল ইউরোপা লিগজয়ী টটেনহ্যাম হটস্পার। দীর্ঘ ছুটির পর মাত্র ছয় দিনের অনুশীলনে নেমে পিএসজি যেন ছিল ছন্দহীন, যেখানে প্রতিপক্ষ টানা ছয় সপ্তাহের প্রস্তুতিতে ছিল শারীরিকভাবে অনেক এগিয়ে।
তবু শেষ ১০ মিনিটে ভাগ্য খুলে যায় ফরাসি জায়ান্টদের। ৮৫তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামা লি কাং-ইনের নিচু শটে ব্যবধান কমে আসে। আর যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে গনসালো রামোসের নাটকীয় গোল ম্যাচটিকে নিয়ে যায় টাইব্রেকারে—স্কোরলাইন তখন ২-২।
পেনাল্টি শুটআউটে শুরুটা ভালো ছিল না পিএসজির। প্রথম শটে ভিতিনহা ব্যর্থ হন, টটেনহ্যাম ২-০ তে এগিয়ে যায়। কিন্তু স্পার্সদের মিকি ফান দে ফেন ও ম্যাথিস টেল শট মিস করলে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। টানা চারটি শট নিখুঁতভাবে জালে পাঠায় পিএসজি, আর শেষ শটটি জোরে জালে ঠুকেন নুনো মেন্ডেস—যা নিশ্চিত করে শিরোপা।
বিশেষ আলোচনায় ছিলেন নতুন গোলরক্ষক লুকাস শেভালিয়ে। লিল থেকে আসা এই ফরাসি গোলকিপার গিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার উত্তরসূরি হিসেবে প্রথম বড় মঞ্চেই জ্বলে উঠলেন। যদিও প্রথম গোলটি প্রতিহত করতে গিয়ে ক্রসবারে লাগিয়ে ফিরিয়েও দুর্ভাগ্যজনকভাবে গোল খেয়েছিলেন, আর দ্বিতীয় গোলটি ছিল তার ভুল বিচার। কিন্তু টাইব্রেকারে ফান দে ফেনের শট রুখে দিয়ে দলের প্রত্যাবর্তনের পথ তৈরি করেন তিনি।
এনরিকে শিষ্যদের মানসিক দৃঢ়তার প্রশংসা করেও বাস্তবতা মনে করিয়ে দেন, ‘টটেনহ্যাম দারুণ খেলেছে, তাদেরই জেতা উচিত ছিল। কিন্তু ফুটবল মাঝে মধ্যে অন্যায় হয়, আর শেষ মুহূর্তে আমরা সৌভাগ্যবান ছিলাম।’
পিএসজি মিডফিল্ডার ভিতিনহার কথায়ও ফুটে উঠল দলগত চেতনা—‘এটাই আসল দল হওয়ার সংজ্ঞা। কেউ ব্যর্থ হলে আরেকজন তাকে তুলে দাঁড় করায়। আজ আমি ব্যর্থ হয়েছিলাম, কিন্তু সতীর্থরা সেটা পুষিয়ে দিয়েছে।’
টটেনহ্যামের কাছে ৮৫ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ হারা অবধারিত মনে হলেও শেষমেশ উল্টে দিল পিএসজি—আর লুইস এনরিকের সতর্ক বাণী মনে করিয়ে দিল, শিরোপা জেতা যেমন সম্ভব, তেমনি হারিয়েও ফেলা সম্ভব যে কোনো মুহূর্তে।
মন্তব্য করুন