সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র ‘ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর’ এলাকা থেকে পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) কালবেলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ।
তিনি বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে দুদকের সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয় কাজ করছে। খুব দ্রুতই তারা প্রতিবেদন জমা দেবে। এরই মধ্যে অনেক প্রভাবশালী লোকজনের যোগসাজশ পাওয়া গেছে প্রাথমিক অনুসন্ধানে। যাদের বিরুদ্ধে এই পাথর লুটপাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
দুদক জানায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর অবহেলা ও অসাধু যোগসাজশে সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা থেকে পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেট হতে গতকাল একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। এনফোর্সমেন্ট টিমের পর্যবেক্ষণে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, পাথর চুরি রোধের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি দপ্তরসমূহ, তথা— খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসমূহ এবং স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ পর্যটন এলাকা থেকে কয়েক শতকোটি টাকার সমমূল্যের পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুদকের অভিযানের পরে সিলেট বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সার্কিট হাউসে সর্বস্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি সভায় (১) জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনীর দায়িত্ব পালন, (২) গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্ট যৌথ বাহিনীসহ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন, (৩) অবৈধ ক্রাশিং মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ অভিযান বন্ধ অব্যাহত রাখা, (৪) পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং (৫) চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়া—এরূপ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দুদক আরও জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযানকালে এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়, দুর্নীতি ও আত্মসাৎ প্রতিরোধে ও প্রতিকারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে অভিযানকালে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
মন্তব্য করুন