শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কৃষকের প্রণোদনা গেল অফিসারের পকেটে

অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম। ছবি : সংগৃহীত
অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম। ছবি : সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় গরিব কৃষকের প্রণোদনার টাকা গেল কৃষি অফিসারের পকেটে। সে টাকা অফিসারসহ কয়েকজন মিলে আত্মসাৎ করেছেন। গত আগস্টের বন্যায় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এরপর কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের তরফ থেকে প্রণোদনা হিসেবে প্রত্যেককে নগদ ১ হাজার টাকা ও বিনামূল্যে সার-বীজ বরাদ্দ দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে প্রায় ২৫০ কৃষককে সে টাকা না দিয়ে মেরে দিয়েছেন কৃষি অফিসারসহ অন্যরা। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেও আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দুর্নীতির কারণে সরকারি এ উদ্যোগ ভেস্তে গেছে।

গত বছরের আগস্টে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের ফলে আখাউড়ায় আকস্মিক বন্যায় উপজেলার সব ইউনিয়নে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বন্যায় কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে নভেম্বরে সরকার ৫ হাজার ৬০০ কৃষকের জন্য প্রণোদনার মাধ্যমে বিনামূল্যে সার-বীজ ও নগদ ১ হাজার করে টাকা বরাদ্দ দেয়।

এর মধ্যে ৪ হাজার কৃষককে নগদ ১ হাজার টাকা, ৫ কেজি বীজ ও ১০ কেজি ডিএপি এবং এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে। আর ১ হাজার ৬০০ কৃষককে সবজির বীজ বিতরণ করা হয়, যা গত ডিসেম্বর প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রম সমাপ্ত করে কৃষি অফিস।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানানো হয়েছে, সব কৃষক নগদ ১ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে উপজেলার মনিয়ন্দ ও মোগড়া ইউনিয়নের প্রায় ২৫০ জনের বিকাশ বা নগদে কোনো টাকা পাঠানো হয়নি। কৃষকদের প্রণোদনার ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম ও অফিসের অন্যরা মিলে আত্মসাৎ করেছেন।

উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের কৃষক হামিদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সব সময় শুধু নাম নেয়। কোনো সময় টাকা পাই নাই। গত বন্যায় আমার তিন বিঘা জমির ফসল নষ্ট হইয়াছে। কৃষি অফিসের লোকজন আইসা দেইখা গেছে। নামও লেইখা নিছে। এই পর্যন্ত কোনো টাকাপয়সা পাইলাম না।’

ওই গ্রামের কৃষানি রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমার বিকাশে কোনো টাকা আসে নাই।’

উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের বড়লৌহঘর গ্রামের কৃষানি ইয়াছমিন বেগম বলেন, ‘বন্যার সময় কৃষি অফিসের লোকজন আইসা নাম-ঠিকানা লেইখা নিছে। আমার বিকাশে কেউ টাকা পাঠায়নি।’

মোগড়া ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের কৃষানি রুমানা আক্তার বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শুধু সার-বীজ পেয়েছি; কিন্তু টাকা পাইনি।

অভিযোগ অস্বীকার করে কৃষি অফিসার তানিয়া তাবাসসুম কালবেলাকে বলেন, সব কৃষকের বিকাশ বা নগদে প্রণোদনার টাকা পাঠানো হয়েছে। সবাই টাকা পেয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত সাহা কালবেলাকে বলেন, এমনটি হওয়ার কথা নয়। কোনো অভিযোগও পাইনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিখোঁজের একদিন পর যুবকের মরদেহ মিলল পুকুরে

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্রয়ের তারিখ ঘোষণা করলেন ট্রাম্প

এশিয়া কাপ দলে জায়গা পেয়ে সোহানের কৃতজ্ঞতার বার্তা

ঘুষ কেলেঙ্কারিতে পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

প্রবীণদের বিশেষ যত্ন নিয়ে বার্ধক্যের প্রস্তুতি নিন: স্বাস্থ্য সচিব

বিভুরঞ্জন সরকারের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত: রাষ্ট্রদূত আনসারী

লা লিগার কাছে যে অনুরোধ করতে চায় বার্সা

‘নির্বাচনে আমলাদেরকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে’

সাবেক এডিসি শচীন মৌলিক কারাগারে

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা আসছেন শনিবার, যেসব বিষয়ে আলোচনা

১০

সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের শানে রিসালাত সম্মেলন

১১

শেষ দিনেও ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে মতামত দেয়নি ৭ রাজনৈতিক দল

১২

ইউরোপের লিগগুলোতে দল কমানোর প্রস্তাব ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তির

১৩

নেপালে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের প্রচার, তাসনিম জারার ব্যাখ্যা

১৪

মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে মৃত্যুর মিছিল, তিন বছরে প্রাণ হারান ১৮৩ জন

১৫

স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি 

১৬

সুদ দিতে না পারায় বসতঘরে তালা, বারান্দায় রিকশাচালকের পরিবার

১৭

দেশ বাঁচাতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে : চরমোনাই পীর

১৮

এএসপির বাসায় চাঁদাবাজি-ভাঙচুর, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৯

জেলের জালে বড় ইলিশ, ৯ হাজারে বিক্রি 

২০
X