বন্যায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বেশিরভাগ সবজিক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লোহাগাড়ায় অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে সবজির দাম। আর বাড়তি দামে সবজি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
লোহাগাড়ায় সবজির চাহিদা স্থানীয় ক্ষেত থেকে পূরণ হয়ে আসছে। বন্যায় উপজেলার ২৫০ হেক্টর সবজি ক্ষেতের মধ্যে ২১৫ হেক্টর ক্ষেত পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন চাহিদার তুলনায় স্থানীয় বাজারগুলোতে সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে জানায় সবজি ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার বৃহত্তম কাঁচাবাজার বটতলী ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁকরোল ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ ১০ দিন আগেও এটি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে মাত্র ২৫ টাকায়। একইভাবে প্রতি কেজি করলা ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, টমেটো ২০০ থেকে বেড়ে ৩০০, শসা ৩০ থেকে বেড়ে ৬০, ঢেঁড়শ ৪০ থেকে বেড়ে ৬০, বেগুন ৪০ থেকে বেড়ে ৭০, ঝিঙে ৩০ থেকে বেড়ে ৮০ ও বরবটি ৫০ থেকে বেড়ে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বটতলী কাঁচা বাজারের কয়েকজন সবজি বিক্রেতার জানায়, তারা লোহাগাড়া ও পার্শ্ববর্তী সাতকানিয়া উপজেলা থেকে সবজি এনে বিক্রি করেন। বন্যার কারণে দুই উপজেলায় সব ধরনের সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলার বাইরে থেকে আমাদের সবজি আমদানি করতে হচ্ছে। দূর থেকে সবজি আমদানিতে পরিবহন খরচ বেশি হয়। তাই বেশি দামে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।
এছাড়া বন্যার প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারেও। স্বাদু পানির মাছ তেলাপিয়া, রুই, কাতলা, মৃগেল, পাঙাশের দাম ১০ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বন্যায় উপজেলার অনেক পুকুর ও মৎস্য খামার ডুবে গেছে। তাই বাজারে মাছের সরবরাহ কম। ফলে দামও কিছুটা বেড়েছে।
বাজার করতে আসা প্রবাসী জয়নাল আবেদনী বিপ্লব বলেন, বন্যার পর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় বাজার করতে এসে চিন্তায় পড়ে গেছি। একটা নিলে আরেকটা নিতে পারছি না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী শফিউল ইসলাম বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় কৃষকেরা বাজারে সবজি সরবরাহ করতে পারছেন না। তাই সবজির দাম বেড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে নতুন করে সবজি চাষে উৎসাহিত করার চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন