সাতক্ষীরা পৌরসভা ও সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে বিএনপির সার্চ কমিটিতে আওয়ামী লীগের দোসরদের অন্তর্ভুক্তির অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ করেছে দলটির নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় সাতক্ষীরার নিউমার্কেটের শহীদ স ম আলাউদ্দীন চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইটাগাছা হাটের মোড়ে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য দেন- সাতক্ষীরা পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. শের আলী, জেলা কৃষক দলের সাবেক আহ্বায়ক আহসানুল কাদির স্বপন, পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল্লাহ্ আল মামুন রাজু।
বক্তারা এ সময় অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির সার্চ কমিটিতে যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাদের অনেকেরই ৫ আগস্টের আগে আন্দোলন সংগ্রামে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি গত ১৭ বছরেও তারা বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে ছিলেন না। আওয়ামী লীগের দোসর, চোরাকারবারি ও বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে যাদের ভূমিকা ছিল না তাদের নিয়েই এ সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। অবিলম্বে সার্চ কমিটি বাতিলের দাবি জানাই।
জানা গেছে, কমিটিতে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে সাতক্ষীরা সদর আসনের সাবেক এমপি রবির ক্ষমতা বলে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে সুবিধাভোগী মো. আসাদুজ্জামান খোকন সার্চ কমিটির দায়িত্বে পেয়েছেন। এ নিয়ে সাতক্ষীরা ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির ত্যাগী কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
পৌর ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতারা জানান, ৫ আগস্টের আগে ওই আসাদুজ্জামান খোকন আওয়ামী লীগের মিটিং ও বিভিন্ন কার্যক্রমে দেখা গেছে। আবার ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেছেন বিএনপির নেতা। গা বাঁচাতে অনেকের মতো তিনিও আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। ৫ আগস্টের পর জামায়াতে ঢোকার জন্য চেষ্টা করেছিল কিন্তু চান্স না পেয়ে বিএনপির সার্চ কমিটিতে সুযোগ পেয়েছে।
সাতক্ষীরা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আশরাফ হোসেন বলেন, আমি ২০০৯ সাল থেকে রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে এসেছি। ৫ আগস্টের পর বিএনপিকে কলুষিত করার জন্য কিছু আওয়ামী লীগের দোসর উঠেপড়ে লেগেছে। তার মধ্যে একজন আসাদুজ্জামান খোকন। এ খোকন সাবেক আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের ছত্রছায়ায় থেকে কুখরালী দাখিল মাদ্রাসা থেকে অবৈধভাবে নিজের কাছের লোকসহ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেয়। খোকনসহ কোনো আওয়ামী লীগের দোসর সার্চ কমিটিসহ বিএনপির কোনো পদে না থাকতে পারে তার জোর দাবি জানাচ্ছি।
সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে জানান, সাতক্ষীরা সদর ও পৌর বিএনপির বিদ্যমান সম্ভাব্য সব নেতা যারা এ দুটি ইউনিটে নেতৃত্বে আসতে চান তাদের সবার কাছ থেকে সার্চ কমিটি গঠনের উপলক্ষে একটি তালিকা চাওয়া হয়। ওই তালিকা সমন্বয় করে সার্চ কমিটি অনুমোদন করা হয়। তবে কারও যদি কোনো প্রশ্ন বা নালিশ থাকে সেগুলো জেলা বিএনপি আমলে নিয়ে সংযোজন ও বিয়োজন করবে।
তিনি আরও লেখেন, দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কোনো কার্যক্রম না করার জন্য জেলার সব নেতাকে সবিনয় অনুরোধ জানাই।
মন্তব্য করুন