চট্টগ্রামে নালায় পড়ে ছয় মাসের শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দুই সপ্তাহেও জমা পড়েনি। তদন্ত কার্যক্রম শেষে পরিপূর্ণ সুপারিশমালা প্রণয়ন করতে তদন্ত কমিটির কলেবর বাড়ানো হয়েছে। এতে যুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন সেবা সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিসহ সাতজন সদস্য। পুনর্গঠিত কমিটি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পারবে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল রাতে নগরীর হিজরা খালে অটোরিকশাসহ পড়ে নিখোঁজ হন ৬ মাস বয়সী শিশু। পরদিন সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনা তদন্তে ২২ এপ্রিল একটি কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
কমিটির সদস্যরা ইতিমধ্যে হিজড়া খালের যেখানে পড়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে, সেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে কমিটিতে বিশেষজ্ঞ সদস্য ও অন্যান্য সেবা সংস্থার প্রতিনিধি না থাকায় পরিপূর্ণ সুপারিশমালা তৈরির সুবিধার্থে নতুন করে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
কমিটিতে সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিনকে প্রধান করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন- প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার ইফতিখার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, আইন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা জজ) মহিউদ্দিন মুরাদ এবং সদস্যসচিবের দায়িত্বে আছেন প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান। তবে নতুন করে এই কমিটিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) ও ফায়ার সার্ভিসের একজন করে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বলেন, চট্টগ্রামে নালায় পড়ে মৃত্যুর ঘটনা এটাই প্রথম নয়। কী কারণে নালায় পড়ে ৬ মাসের শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তা মোটামুটি সবাই জানেন। আমরা শুধু কারণ উদ্ঘাটন করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে চাচ্ছি না। এ ধরনের মৃত্যু ঠেকাতে করণীয় নির্ধারণে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা এ বিষয়ে পরিপূর্ণ সুপারিশমালাও দিতে চাই। যাতে এসব সুপারিশ সিটি করপোরেশন, সিডিএ ও ওয়াসাসহ সেবা সংস্থাগুলো উন্নয়নকাজ পরিচালনার সময় অনুসরণ করে।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিবেদনে অরক্ষিত খাল ও নালা-নর্দমাগুলো টেকসই ও স্থায়ীভাবে সুরক্ষিত করার বিষয়ে সুপারিশ দেব। এজন্য কমিটিতে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি যুক্ত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধির সদস্যরা একেকজন একেক জায়গার। ওনাদের সবাইকে একত্র করা কিছুটা সময় সাপেক্ষ। এজন্য প্রতিবেদন জমা দিতে কিছুটা সময় লাগছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরীতে ৫৭টি খাল রয়েছে। এই খালগুলো দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)। এসব নালায় প্রতিবছরই কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
মন্তব্য করুন