কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫০ নেতার পদত্যাগ

কিশোরগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫০ নেতা পদত্যাগ। ছবি : কালবেলা
কিশোরগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫০ নেতা পদত্যাগ। ছবি : কালবেলা

কিশোরগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫০ নেতা পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (০৮ মে) বিকেলে জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন নেতারা।

পদত্যাগকারী নেতারা হলেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক জেবা আফতাবুন কারিকা, রায়হান জোহান, আরিফুজ্জামান আলভী, হুজাইফা ইভান, আকিব হোসেন, সাইফ আব্দুল্লাহ মানার, নাঈম হক, তানজীব তকি, যুগ্ম সদস্য সচিব নীলিমা আক্তার প্রমি, তাবাসসুম কাওসার প্রিয়ন্তী, নওশাদ নাঈম, মো. শামীম মিয়া, মশিউর রহমান, সুমাইয়া শাওন, নুরজাহান রহমান পপি, আদিব আহসান সাদাব, সংগঠক শারমিন আক্তার মিতু, ফাইজা তাবাসুম, লাবনী আক্তার ও ইসরাত খান অর্পিতা।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য সেল সদস্য নাহিন, মির্জা মোফাজ্জল, মোয়াইমিন খান তানিম, সদস্য সালেহীন অভি, ইরফান আহমেদ রাব্বী, মইনুল ইসলাম চাঁদ, সাইদ আব্দুল্লাহ মোয়াজ, আজিজুল হাকিম জনি, সাইফুল্লাহ তারিফ, শেখ মোহাম্মদ আলভি, অনিক আহম্মেদ, নাঈমুল ইসলাম আকাশ, সিয়াম আহমেদ, নাহিস হাসান জয়, অনিক রায়হান, মহিদুর রহমান তপু, আবির হোসেন, আলিফ, আশরাফুল ইসলাম শান্ত, নৌশাদ জোসান, মাহফুজা আক্তার, মো. সা্ব্বির, রকি, সানি, মো. মোস্তাকিম ও নাঈমুল হাসান রাকিব পদত্যাগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে পদত্যাগ করা যুগ্ম আহ্বায়ক আলী রায়হান জোহান বলেন, কমিটি গঠনের পর থেকেই জেলা কমিটির দায়িত্বশীলদের মাঝে স্পষ্টত হয়ে উঠে দায়িত্বহীনতা দেখা যায়। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অন্যায় দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

জেলা কমিটির কয়েকজন স্বৈরাচারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। যে বা যারাই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তাকেই করা হতো বহিষ্কার। এরইমধ্যে কয়েকজনের বহিষ্কারের ঘটনা স্পষ্টভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নৈতিকতা বিরোধী এবং আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের একক আধিপত্যের বহিঃপ্রকাশ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অন্যায় দুর্নীতি এবং সেচ্চাচারিতার বিরুদ্ধে সৌচ্চার হয়ে জেলা কমিটির অন্তত ৫০ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটিতে মো. ইকরাম হোসনকে আহ্বায়ক ও ফয়সাল প্রিন্সকে সদস্য সচিব করে ৩২১ জনের কমিটি করা হয়। আমরা নতুন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। যারা দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে কোন ভূমিকা না থাকরেও ফয়সাল প্রিন্স জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব পদ ভাগিয়ে নিয়েছে। সদস্য সচিবকে প্রমাণ দিতে হবে যে, আন্দোলনে তার ‍ভূমিকা কী ছিল। সে অবিপ্লবী একজন মানুষ।’

বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মিয়া বলেন, আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ও সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্সের কিছু অনিয়ম ও দুর্নীতি আমাদের কাছে ধরা পড়েছিল। আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম। দুর্নীতি ঢাকতে তারা আমাকে ও রিয়াদ আহমেদ উল্লাসকে বহিষ্কার করেছে। এইটা অসাংবিধানিক কাজ। যেই অডিও ভাইরালের প্রেক্ষিতে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সেখানে আমার কোন ভয়েস ছিল না। তারা কোনো তদন্ত না করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্স তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, আমি যদি আন্দোলনে না থাকতাম তাহলে গত ৯ মাস আমার সঙ্গে কীভাবে ছিল। তাদের এ পজিশন তো আমার কারণেই আসছে। আমি অনৈতিক কাজ করতে দেয়নি বলে এখন আমি ভালো না। পদত্যাগের বিষয়ে অনেকেই জানেই না তারা পদত্যাগ করেছে। কমিটিতে নাম আছে এমন ৫-৭ জনের পদত্যাগপত্র পেয়েছি। যারা পদত্যাগ করেছে তাদের নাম থাকলেও কোনদিন কোনো প্রোগ্রামে পাইনি। বহিষ্কৃত মামুন মিয়া ও উল্লাসের বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের যথেষ্ট প্রমাণ আছে তার প্রেক্ষিতেই তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. ইকরাম হোসেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, আমার কাছে ৩-৪ জনের পদত্যাগপত্র আসছে। যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে তাদের মধ্যে ৩-৪ জন আমাদের কমিটিতে আছে। বহিষ্কৃত মামুন মিয়া বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা নিয়েছেন। এসব প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। তার জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

বাজার ইজারা নেওয়ার ব্যাপারে বলেন, নীলগঞ্জ বাজারটি আগে আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে নিতো। আর এ কারণে স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা জিম্মি থাকতো। তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত খাজনা, চাঁদা আদায় করত। আমার বাড়িটা যেহেতু বাজারের কাছে তাই এইবার বাজারের ৩৮ জন ব্যবসায়ী ও নাগরিক কমিটির স্থানীয় নেতারা বাজার ইজারা নেওয়ার পর যেন কোন সমস্যা না হয় সাপোর্টের জন্য জোর করে তারা আমার নামটা রেখে দিয়েছে। আমার সেখানে কোনো বিনিয়োগ নেই। ব্যবসায়ীরা সব করেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দাড়ি রাখা, অগোছালো পোশাক আর মেনে নেওয়া হবে না : মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

গাজামুখী নৌবহর থেকে সরে দাঁড়াল ইতালি

অবশেষে নেপালের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়

বিশ্বকাপে ভারতের শুভসূচনা

বিশ্বকাপ শুরুর আগে বাংলাদেশ দলে দুঃসংবাদ

এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকে রিয়ালের বড় জয়

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

পূজায় কোনো নিরাপত্তার ঝুঁকি নেই : ডিএমপি কমিশনার

হাসপাতালের বিছানায় সাবেক মন্ত্রীর বিতর্কিত ছবি নিয়ে যা বলছে কারা কর্তৃপক্ষ

বিএনপির পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে নর্থ আমেরিকা পররাষ্ট্র কমিটির বৈঠক

১০

বিএনপি ক্ষমতায় এলে সকলে মিলে দেশ গড়বো : ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ

১১

বকেয়া বিল আদায়ের ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার

১২

ঐক্যবদ্ধভাবে অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে : সেলিমুজ্জামান 

১৩

ধেয়ে আসছে শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় ‘প্রবাহ’

১৪

চবির ফারসি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম অভিযোগ গেল দুদকে

১৫

একজন চিকিৎসক দিয়েই চলছে হাসপাতাল

১৬

চারদিন পর খাগড়াছড়িতে অবরোধ স্থগিত

১৭

চলতি অর্থবছর কেমন হবে, জানাল এডিবি

১৮

বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবাই মিলে দেশ গড়ব : ড. ফরিদুজ্জামান

১৯

সিপিআর বাঁচাতে পারে হার্ট অ্যাটাকের লাখো প্রাণ

২০
X