পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৯ মে) সকাল ১০টার দিকে কুয়াকাটার তুলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাদশা ফরাজীর বাড়ির সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে বাদশা ফরাজীসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- বাদশা ফরাজী (৫০), বাদল ফরাজী (৫০), বকুল বেগম (৪৫), রাসেল (১৯), মানসুরা (৫০), কোহিনুর বেগম (৪০) ও মিলন (২২)।
অন্যদিকে কুদ্দুস ফরাজি পরিবারের রুহুল আমিন (৩২), ইয়াকুব (৩৪) ও লাইলী বেগম (৫০) আহত হয়েছেন। আহতদের কুয়াকাটার ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কলাপাড়া উপজেলা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বাদশা ফরাজী ও কুদ্দুস ফরাজীর পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। শুক্রবার সকালে বাদশা ফরাজীর পরিবারের সদস্যরা জমিতে কাজ করছিলেন, এমন সময় কুদ্দুস ফরাজীর পক্ষের কয়েকজন সেখানে এসে অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে বলে অভিযোগ রয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করেন। বর্তমানে এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মো. রিয়াজ জানান, আহতদের মধ্যে সাতজনের মাথা ও বুকসহ বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত রয়েছে। এজন্য প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের কলাপাড়ায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
অভিযুক্ত কুদ্দুস ফরাজী বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে একটি জাল দলিলে জমি দাবি করে আমার জমিতে দুটি ঘর নির্মাণ করেন বাদশা ফরাজী গংরা। ৫ তারিখের পরে আমি ঘর দুটি ভেঙে দেই। এ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আমি পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ মুসল্লির নিকট কাগজপত্র জমা দিলেও প্রতিপক্ষরা কোনো কাগজপত্র উপস্থাপন করছেন না। কিন্তু আজ সকালে আমি জানতে পারি প্রতিপক্ষরা ফের আমার জমিতে ঘর নির্মাণ করছে। আমি সেখানে গেলে প্রতিপক্ষরা আমার উপরে হামলা চালায়। এতে আমার তিনজন লোক আহত হয়েছে। পরে আমার লোকজন প্রতিরোধ করলে তাদেরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
প্রতিপক্ষ বাদশা ফরাজী বলেন, ৫ তারিখ রাতে আমাদের দুটি বসতঘর ভেঙে ফেলে কুদ্দুস ফরাজী গংরা। আমরা এতদিন কারও কাছে ন্যায়বিচার না পেয়ে আজ সকালে আমাদের জমিতে ঘর তুলতে ছিলাম। এমন সময় কুদ্দুস ফরাজী গংরা ১৫ থেকে ২০ জন লোক নিয়ে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের সাতজন আহত হয়েছে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন