ঝালকাঠিতে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য অসহায় এক নারীর গরু নিয়ে যাওয়া সেই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে রাজাপুর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রতন দেবনাথ ও সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মো. বেল্লাল হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলাদেশ জাতায়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ১ নং ওয়ার্ড, ২ নং শুক্তাগড় ইউনিয়ন রাজাপুর, ঝালকাঠি। বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, পাওনা টাকা আদায় করতে গিয়ে আবু বকরের পোষা গাভী তার গোয়াল থেকে নিয়ে এসেছেন। যা বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এতে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত হই।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আপনার এই কর্মকাণ্ড কোনো সভ্যসমাজে আচারণ হতে পারে না। যেহেতু আপানি জেনে শুনে এ ধরনের কাজে লিপ্ত হয়েছেন তাই দল আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সমস্ত পদ ও পদবী এবং দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হল।
উল্লেখ্য, ঝালকাঠির রাজাপুরে ‘চাঁদার’ টাকা না পেয়ে নার্গিস বেগম নামে এক গৃহবধূর গরু নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়নের ঘিগড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মো. বেলাল খান। তিনি শুক্তাগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। বেল্লাল খানের ভাষ্য, চাঁদার টাকার জন্য নয়, নার্গিসের স্বামীর কাছে পাওনা ২০ হাজার টাকার জন্য তিনি গরুটি নিয়ে গেছেন। টাকা দিয়ে দিলে তিনি গরুটি ফেরত দেবেন।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী নার্গিস বেগম শুক্তাগড় ইউনিয়নের ঘিগড়া গ্রামের আবু বক্করের স্ত্রী। আবু বক্কর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ নারগিস আক্তার জানান, গত কয়েক মাস ধরে তার স্বামী এলাকা ছাড়া। স্ত্রীর খোঁজখবরও রাখছেন না তিনি। গার্মেন্টসে চাকরি করে কিছু অর্থ জমিয়ে সম্প্রতি নারগিস বেগম একটি দুধের গরু কেনেন। সেই গরুটির এক মাসের একটি বাছুরও রয়েছে। কিন্তু তার স্বামীর কাছে ২০ হাজার টাকা পাওনা দাবি করে স্থানীয় শুক্তাগড় ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল খান গরুটি নিয়ে যান।
কিন্তু মা গরুটিকে নিয়ে যাওয়ায় দুধ না খেতে পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বাছুরটি।
অভিযুক্ত মো. বেলাল খান বলেন, ৯ বছর আগে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প থেকে নার্গিসের স্বামী আবু বকরকে ২০ হাজার টাকা তুলে দেই। যা এখন সুদে আসলে ৩০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। আমার টাকা না দেওয়ায় আমি গরু নিয়েছি। তবে এ ঘটনায় আদালতে কোনো মামলা হয়নি।
পরে সেই গাভির এক মাস বয়সী বাছুর কোলে নিয়ে ন্যায়বিচারের আশায় ঝালকাঠি আদালতে হাজির হয়েছেন নারগিস।
মন্তব্য করুন