বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ চিকিৎসার জন্যই বিদেশে আছেন বলে জানিয়েছেন তার ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের নিজের ব্যক্তিগত আইডিতে এক পোস্টে আবদুল হামিদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘৮২-৮৩ বৎসরের একজন বয়স্ক লোক যিনি কিনা অসুস্থতার কারণে এখন ২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না, ২ ঘণ্টা বসে থাকতে পারছেন না বাধ্য হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েন। ওজন কমতে কমতে এখন ৫৪ কেজি। যে কারণে নিজের কোনো প্যান্ট পরতে পারছেন না বাধ্য হয়েই লুঙ্গি পড়ে থাকতে হচ্ছে। তাকে বেটার চিকিৎসার জন্য ডাক্তাররা বোর্ড করে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বিদেশে চিকিৎসা করানোর জন্য।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রকাশ্যে বলেছেন যে উনি আর পলিটিক্সের সঙ্গে জড়িত হবেন না এবং তারপর পলিটিক্সের সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত হননি। আবার যেখানে শত শত লোক বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা করাতে নিয়মিত থাইল্যান্ড যাচ্ছে সেখানে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য তিনি আসতেই পারেন।’
এ ঘটনাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘সকলেই দোয়া করবেন যেন তিনি সুস্থ হয়ে তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসতে পারেন ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি যদি মিথ্যা বলে থাকি তবে আল্লাহর লানত আমার ওপর পরুক। আর যারা মিথ্যা প্রচার করছে তারা যদি তাদের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের কাছে তওবা না করে তবে তাদের সবার ওপর আল্লাহর লানত পরুক। আমিন ইয়া রাব্বুল আল আমিন।’
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা মোঃ আবদুল হামিদ গত ৬ মে রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন। আবদুল হামিদের দেশত্যাগে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার ও শ্যালক ডা. আ ন ম নৌশাদ খান গেছেন। দেশের চিকিৎসকদের পরামর্শেই তিনি বিদেশে গেছেন বলে জানা যায়।
আবদুল হামিদ ২০১৩ সালে ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি, ২০১৮ সালে ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। তার মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মোঃ সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবন ছাড়ার পর আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে তারা বাসায় উঠেছিলেন।
ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় কিশোরগঞ্জে সদর মডেল থানায় ১৪ জানুয়ারি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবুদল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহেনা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সামা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
আবুদল হামিদের দেশত্যাগের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এরই প্রেক্ষিতে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য করুন