মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করার এক ঘণ্টার মাথায় তাদের ওপর ফের হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ।
বুধবার (২৮ মে) দুপুর দেড়টার দিকে মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ চাঞ্চল্যকর হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, প্রথমে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে দক্ষিণ শালিকা ও গুচ্ছ গ্রামের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আদালত প্রাঙ্গণে এ সংঘর্ষে সাইফুল হোসেন, রাজ (২৪) এবং সেলিম রেজা (৫০) আহত হন। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের ভর্তি করার পর এক ঘণ্টাও না যেতেই আনুমানিক দুপুর দেড়টার দিকে প্রতিপক্ষের কয়েকজন সদস্য হাসপাতালে হামলা চালায়। তারা জরুরি বিভাগে ঢুকে চিকিৎসাধীন সাইফুল ও রাজকে বেডে থাকা অবস্থাতেই লাঠি ও ঘুষি-থাপ্পড়ে মারতে থাকে।
এ সময় হাসপাতালে থাকা অন্যান্য রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
হাসপাতালের এক নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘এভাবে ভেতরে ঢুকে রোগীদের ওপর হামলা সত্যিই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় সাইফুল হোসেনের মাথায় ফের আঘাত লাগে এবং অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
আদালত প্রাঙ্গণে বারবার হামলা ও আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিডিউটর অ্যাডভোকেট সাইদুর রাজ্জাক কোনো প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘আদালত চত্বরে সংঘর্ষের পর হাসপাতালে আবার হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।’
উল্লেখ্য, মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং আদালত চত্বরে ইতোপূর্বেও কয়েক দফা এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গত বছর জেলা জজ আদালতের তৃতীয় তলায় স্বামী স্ত্রী ধস্তাধস্তি করতে করতে তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে মাটিতে পড়েও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিল। মাত্র কয়েকদিন আগেই আদালত চত্বরের পাশেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের শুনানি শেষে জামাই ও শ্বশুরের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। হেরু কিছুদিন আগে এক সন্ত্রাসী দা নিয়ে থেকে মেহেরপুর বার কাউন্সিল অফিস পর্যন্ত বিভিন্ন জনকে তাড়া করে তাণ্ডব চালিয়েছিল। সর্বশেষ আজকের এ ঘটনা।
আদালতের বিষয়ে বলে অনেকেই প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য না দিলেও আদালত চত্বর এবং আদালত প্রাঙ্গনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
মন্তব্য করুন