বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি নিয়ে চট্টগ্রামে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি হয়েছে। এ সময় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নারীসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দুজনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (২৮ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম নগরের জামাল খান এলাকার প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইদুল হক জানিয়েছেন, চটগ্রাম শাখার সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়া, সেক্রেটারি একান্ত বিশ্বাস, অর্থ সম্পাদক সুদিপ্ত গুহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠক রিশাদ আহমেদ, নগর ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি রিপা মজুমদার ও ছাত্রফ্রন্টের নগর শাখার সদস্য অর্পিতা নাথ আহত হয়েছেন। তারা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আজহারুলকে খালাস দিয়ে মঙ্গলবার (২৭ মে) রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বুধবার তিনি মুক্তি পান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, জামায়াতের এ নেতার খালাসের প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’ প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি আহ্বান করে। একই সময় সেখানে পাল্টা কর্মসূচি দেয় ‘এন্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’ নামের একটি সংগঠন। প্রথমে উভয়পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলেও পরে উত্তেজনা বাড়ে এবং একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ সময় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ব্যানার ছিঁড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
অন্যদিকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চেরাগি মোড় থেকে স্লোগান দিতে দিতে একদল লোক প্রেস ক্লাবের দিকে এগিয়ে আসেন। সিকদার হোটেলের সামনে একজনকে মারধর করতে দেখা যায়, যারা ‘এন্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’র কর্মী বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ দুজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম সাংবাদিকদের কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে, সংঘর্ষের সময় প্রেস ক্লাবের সামনে উপস্থিত ছিলেন ‘জুলাই ঐক্য চট্টগ্রাম’র প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান এবং ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র নেতা তওসিফ ইমরোজ।
আবরার হাসান বলেন, ‘একজন জামায়াত নেতার রায় নিয়ে বাম ছাত্র সংগঠনের কিছু কর্মী দাঁড়িয়েছিল। একই সময়ে শাহবাগবিরোধী কর্মীরাও স্লোগান দিচ্ছিল। পুলিশ শান্ত রাখতে চেষ্টা করলেও কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়।’
মন্তব্য করুন