বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে চট্টগ্রামের পশুরহাটে ঢুকছে গরুবাহী ট্রাক। এবার পশুরহাটে নজর কাড়ছে উট। নগরীর মইজ্যারটেক সিডিএ আবাসিক মাঠের পশুরহাটে তিনটি উট আনা হয়েছে। এ খবরে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষণীয়।
শুক্রবার (৩০ মে) তিনটি উটের মধ্যে একটি ২৭ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। তবে বেচাকেনা এখনো পুরোদমে জমে ওঠেনি। বৈরী আবহাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন বেপারিরা।
জানা যায়, বিগত দুই থেকে তিন বছর ধরে আকবর আলী প্রকাশ আকবর মামা সিডিএ আবাসিক মাঠে পশুরহাটটি জমজমাট করে তুলেছেন। এর পাশে মইজ্যারটেক পশুরহাট রয়েছে। হাটটিতে ১২ মাসই গরু-ছাগল বেচাকেনা চলে। তবে কর্ণফুলী পশুরহাটটি বছরে একবার বসানো হয়। যশোরের নাসির নামে এক খামারি উটগুলো নিয়ে এসেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে তিনি উট নিয়ে আসেন। আরও ৪টি উট আশার অপেক্ষায়। বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের একজন ২৭ লাখ টাকা দিয়ে একটি উট কিনেছেন। যদিও সৌদি আরবে সামর্থ্য অনুযায়ী উট দিয়ে কোরবানি করে থাকে। এছাড়া দুম্বা, ছাগল ও গরু দিয়েও কোরবানি করেন অনেকে।
বেপারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কালবেলাকে বলেন, প্রতি বছর আকবর মামার হাটে তারা উত্তরবঙ্গ থেকে পশু নিয়ে আসেন। এক সময় সাগরিকা গরুর বাজারে আকবর মামার মাধ্যমে আসা হয়। সাগরিকা থেকে আকবর মামা এখন সিডিএ আবাসিক মা হাট ডাক নিয়েছেন। তিন বছর এই হাটেই গরু নামাই। আকবর মামাও কোরবানির তিন মাস আগে থেকে উত্তরবঙ্গে গিয়ে সব ঠিকঠাক করে আসেন। গরু বেচাবিক্রির টাকা পাঠানো এবং আসা-যাওয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো অসুবিধায় পড়তে হয়নি।
সীমান্তবর্তী জেলা যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলের পুটখালী গ্রামের খামার মালিক নাসির হোসেন বলেন, দীর্ঘ এক বছর ধরে উটগুলো লালনপালন করা হয়েছে। সৌদি আরব থেকে আমদানি করা ৭টি উট খামারে আনার পর থেকে দেশীয় আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সময় লেগেছে। তবে নিয়মিত পরিচর্যা ও বিশেষায়িত খাবারের মাধ্যমে এগুলোকে সুস্থ ও কোরবানির উপযোগী করা হয়েছে। এগুলোর উচ্চতা ১২ থেকে ১৫ ফুট।
কর্ণফুলী উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা আজমল হোসেন কালবেলাকে বলেন, আকবর মামার পশুরহাটের নাম দক্ষিণ জেলাতে ছড়িয়ে পড়েছে। আগে এই হাটটি ছিল না। মইজ্যারটেক বাজারেই গরু বেচাকেনা হতো। এই বাজারের পাশে সিডিএ আবাসিক মাঠে তিন বছর ধরে আকবর মামার হাটটি বছরে একবার বসানো হয়। বড় বড় গরু তোলা হয়। দেখতেও সুন্দর। এবার উট এনে তিনি চমক লাগিয়ে দিয়েছেন। ক্রেতারা গাড়ি পার্কিং করে গরু পছন্দ করতে কোনো অসুবিধে হয় না। গরু নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দিতে ট্রাকেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
হাট ইজারাদার আকবর আলী প্রকাশ আকবর মামা কালবেলাকে বলেন, বছরে একবার মইজ্যারটেক সিডিএ আবাসিক মাঠে গরু-ছাগলের বাজার বসানো হয়ে থাকে। আমার সঙ্গে যারা পরিচিত আছেন বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের বেপারিরা তারাই মূলত এখানে গরু নিয়ে এসেছেন। এবার যশোর থেকে উট এসেছে। সাতটি উট আসার কথা রয়েছে। তিনটি এসে গেছে। এর মধ্যে একটি ২৭ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাকি চারটি আসছে।
তিনি আরও বলেন, অত্র এলাকার মানুষ আমাদেরকে যথেষ্ট সহযোগিতা করছে। বাজারের মধ্যে একাধিক ভলানটিয়ার রয়েছে। বেপারিদের জন্য গোসল থেকে শুরু করে শৌচাগারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। কোনো ধরনের ঝক্কিঝামেলা ছাড়া যে কেউ এ বাজার থেকে কোরবানির গরু কিনতে পারবেন। কোরবানের পর হিন্দুদের মনসা পূজার জন্য পাঁঠা ছাগলেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন