লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তিস্তার পানি বৃদ্ধি, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

পানির নিচ থেকে ধান কাটছেন কৃষকরা। ছবি : কালবেলা
পানির নিচ থেকে ধান কাটছেন কৃষকরা। ছবি : কালবেলা

উজানের ঢল ও টানা ভারি বর্ষণে গত দুদিনে তিস্তা নদীর পানি বিপজ্জনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লালমনিরহাট জেলার তিস্তা তীরবর্তী বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের শত শত একর ফসলি জমি এবং রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।

সোমবার (০২ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রোববার (০১ জুন) সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার মাত্র ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি প্রবাহ কমতে থাকে। একই পয়েন্টে বিকাল ৩টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সোমবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর সকাল ৯টায় ৬৫ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ৭০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। কিন্তু ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে তিস্তার পানি ফের বেড়ে বিকাল ৩টায় ৫৫ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় পানি আরও বেড়ে ৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন দুই পাড়ের মানুষ।

জানা গেছে, পানি বেড়ে যাওয়ায় অনেক জমির ফসল কাটার উপযুক্ত সময় হলেও তা ঘরে তোলার আগেই প্লাবিত হয়ে যায়। এতে সবজি ও অন্যান্য ফসল ঘরে তোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন কৃষক। তারা এখন নৌকা ও অন্যান্য উপায়ে ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে ফসল উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় একই অবস্থা দেখা গেছে। নদী তীরবর্তী পাঁচটি উপজেলার চরাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। কোথাও কোথাও পাট, ভুট্টা ও বাদাম পানিতে তলিয়ে গিয়ে গাছ পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষক পরিবারগুলো।

মহিষখোচার গোবর্ধন এলাকার কৃষক আবুল হোসেন জানান, আমার দুই একর জমিতে ভুট্টা ছিল। কাটার সময় হয়েছিল, কিন্তু হঠাৎ পানি এসে সব ভাসিয়ে নিয়ে গেল। এখন আর কিছুই করার নেই। নৌকা দিয়ে যা পারি তুলে নিচ্ছি।

আরেক কৃষক হাসান আলী বলেন, আর ১৫/২০ দিন সময় পেলেই বেশিরভাগ ফসল ঘরে তুলতে পারতাম। হঠাৎ করে বন্যায় ক্ষতির আশঙ্কা করছি। শেষ সময়ে এসে পানি পেলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। এ বছর বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ বন্যা দেখা দিয়েছে। আমরা পরবর্তীতে ক্ষতি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

পানি বোর্ড লালমনিরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, শুষ্ক মৌসুমে যেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছিল, সেখানে প্রতিরক্ষা কাজ আগেই সম্পন্ন করা হয়েছে। জরুরি দুর্ঘটনা মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী তিন দিন তিস্তায় পানি কিছুটা বাড়তে পারে। তবে তিস্তা পানি উন্নয়ন বোর্ডও রয়েছে সতর্ক অবস্থানে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২০১৮ সালের নির্বাচনের বদনাম ঘোচাতে চায় পুলিশ : ডিএমপি কমিশনার

ওয়েস্ট হ্যামের বিরুদ্ধে চেলসির বড় জয়

নরসিংদী জেলা সাংবাদিক সমিতি, ঢাকা’র নতুন কমিটিকে সংবর্ধনা

কেইনের হ্যাটট্রিকে লেইপজিগকে উড়িয়ে দিল বায়ার্ন

নিখোঁজের একদিন পর যুবকের মরদেহ মিলল পুকুরে

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্রয়ের তারিখ ঘোষণা করলেন ট্রাম্প

এশিয়া কাপ দলে জায়গা পেয়ে সোহানের কৃতজ্ঞতার বার্তা

ঘুষ কেলেঙ্কারিতে পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

প্রবীণদের বিশেষ যত্ন নিয়ে বার্ধক্যের প্রস্তুতি নিন: স্বাস্থ্য সচিব

বিভুরঞ্জন সরকারের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত: রাষ্ট্রদূত আনসারী

১০

লা লিগার কাছে যে অনুরোধ করতে চায় বার্সা

১১

‘নির্বাচনে আমলাদেরকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে’

১২

সাবেক এডিসি শচীন মৌলিক কারাগারে

১৩

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা আসছেন শনিবার, যেসব বিষয়ে আলোচনা

১৪

সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের শানে রিসালাত সম্মেলন

১৫

শেষ দিনেও ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে মতামত দেয়নি ৭ রাজনৈতিক দল

১৬

ইউরোপের লিগগুলোতে দল কমানোর প্রস্তাব ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তির

১৭

নেপালে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের প্রচার, তাসনিম জারার ব্যাখ্যা

১৮

মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে মৃত্যুর মিছিল, তিন বছরে প্রাণ হারান ১৮৩ জন

১৯

স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি 

২০
X