ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৪৫০ পরিবারের অন্তত দেড় হাজার মানুষ।
রপ্তানিকারকদের কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি জমলেও স্থলবন্দরের ব্যবসা কার্যক্রমসহ যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক আছে।
শনিবার (৩১ মে) রাত থেকে উপজেলায় পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে আখাউড়ার বিভিন্ন নদনদী, খাল-বিলে পানি বেড়ে চলেছে। আখাউড়া স্থলবন্দরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কালন্দি খাল, কালিকাপুর হয়ে আবদুল্লাপুর দিয়ে জাজি গাঙ, বাউতলা দিয়ে মরা গাঙ ও মোগড়া ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে চলা হাওড়া নদী দিয়ে গত শনিবার রাতে অস্বাভাবিকভাবে ঢলের পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ, মোগড়া ও মনিয়ন্দ ইউনিয়নের গ্রামের ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও কিছু বাড়িঘর তলিয়ে যায়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৪৫০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি পরিবারের জন্য ১৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার আবদুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে ১৩টি পরিবারের ৫০ জন রোববার আশ্রয় নিয়েছেন।
আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্টের পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার বলেন, সোমবার (০২ জুন) সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ২০০ জন যাত্রী পারাপার হয়েছে। সকালের পর থেকে ইমিগ্রেশন ভবনের সামনের অংশে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান বলেন, আখাউড়া উপজেলার হাওড়া নদীর ভারত সীমান্তে সোমবার সকাল ৯টায় পানির সমতল ছিল ১১ দশমিক ২২ মিটার। স্থানটির বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৭০ মিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। রোববার (০১ জুন) একই সময়ে পানির সমতল ছিল ১১ দশমিক ৫৮ মিটার। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি এম রাশেদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, হাওড়া নদীর বাঁধ অক্ষত আছে। ১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৪৫০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই একটি আশ্রয়কেন্দ্রে কয়েকটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে (বুধবার) সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ও ঢলের তীব্রতায় মোগড়া, মনিয়ন্দ ও দক্ষিণ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পানি উঠে যায়, ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। রোববার উপজেলার ১০ টি গ্রাম প্লাবিত ছিলো। সোমবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯টি গ্রাম।
মন্তব্য করুন