যানজট নেই, তবে যানবাহনের চাপ আছে। গরুর বাজার থাকায় কোথাও ধীরগতি। ঈদ আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের ঢল নেমেছে। ঈদযাত্রায় সড়কে যানজটের আশঙ্কা থাকলেও এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম ১০৩ কিলোমিটার সড়কে কোথাও স্থায়ী যানজট না থাকায় ঘরমুখো মানুষজন স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে মহাসড়কে দেখা যায় এই চিত্র। এবারও ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীর চাপে মহাসড়কে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বুধবার সকাল থেকেই যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করে, যা বৃহস্পতিবার অব্যাহত রয়েছে।
তবে যানবাহনের চাপ বাড়লেও মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে কোথাও কোনো যানজট নেই। এ সময়ে যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও। এছাড়া রয়েছে পণ্যবাহী ও পশুবাহী ট্রাক। যানজট না থাকলেও পরিবহনের চাপে মহাসড়কের বাজারগুলোতে পরিবহন ধীরগতিতে চলছে। নিমসার, ইলিয়টগঞ্জ, পদুয়ার বাজার ও চৌদ্দগ্রাম বাজারে মাঝে মাঝে থেমে থেমেও পরিবহন চলতে দেখা গেছে।
ঢাকা থেকে তিন ঘণ্টায় বাসে করে কুমিল্লা নির্বিঘ্নে এসে পৌঁছেছেন তৈয়ব আলী। পরিবার নিয়ে কুমিল্লায় প্রতিবছরই এভাবে এসে ঈদ করেন। তার মতে সড়ক ফাঁকা, ট্রাক কভার্ডভ্যানের দৌরাত্ম্য নেই। ঈদের ছুটি লম্বা হওয়ায় এক ধরনের স্বস্তি আছে সবার মধ্যে।
মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি এবার কাজ করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। এছাড়াও, জেলা প্রশাসন ও রোভার স্কাউটস সদস্যরাও কাজ করে যাচ্ছেন। এতে মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি, ইলিয়টগঞ্জ, মাধাইয়া, চান্দিনা, নিমসার, ক্যান্টনমেন্ট, পদুয়ার বাজার, মিয়াবাজার, চৌদ্দগ্রামসহ অন্যান্য স্থানগুলোতে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ কুমিল্লা মো. খাইরুল আলম জানান, সকল অফিসার-ফোর্স দিবারাত্রি অত্যন্ত আন্তরিকতা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে মহাসড়কে অবস্থান করে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। পাশাপাশি স্বস্তির ঈদযাত্রা উপহার দিতে মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযানও চলছে।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম সেক্টরের ২২টি সাবসেক্টরে (থানা এলাকায়) দিবারাত্রি ডিউটি করার জন্য পুলিশের ৬৮টি মোবাইল টিম, পিকেট ডিউটির জন্য ৩৩টি টিম কাজ করছে নিয়মিত বাহিনীর বাইরে। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে হাজির হওয়ার জন্য মোটরসাইকেলযোগে ২২টি কুইক রেসপন্স টিমসহ স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে আরও একটি টিম রয়েছে। এছাড়া যেকোনো দুর্ঘটনায় ও যানজট এড়াতে এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা দিতে ৪টি সরকারি, ১৮টি বেসরকারি রেকার ও একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এছাড়াও সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের জন্য স্থায়ী একটি কন্ট্রোল রুম ছাড়াও ২২টি অস্থায়ী কন্ট্রোলরুম ও ওয়াচ টাওয়ার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
হাইওয়ে কুমিল্লার রিজিয়নের পুলিশ সুপার বলেন, গরু কেনাবেচায় মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনে পুলিশের সহায়তার জন্য প্রত্যেকটি ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে সড়ক মহাসড়কে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির যেকোনো অপতৎপরতা রুখে দিতে হাইওয়ে পুলিশের যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। এছাড়াও হাইওয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী, জেলা পুলিশহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে কাজ করছে।
মন্তব্য করুন