প্রবাসীর স্ত্রীর অবৈধ পরকীয়া দেখে ফেলায় প্রেমিকের সঙ্গে যোগসাজশে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার রাজমিস্ত্রি রাশিদুল ইসলাম রাসুকে (৩৫)। হত্যার পর তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয় ওই প্রেমিক যুগল বলে জানায় পুলিশ।
আলোচিত এই হত্যা মামলার তিনদিন পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ভয়নগর গ্রামের প্রবাসী আলাউদ্দিনের স্ত্রী আন্না খাতুন (৩৫) ও একই গ্রামের কাবেদ আলীর ছেলে রিকশাচালক সুমন রেজা (৩০)। অন্যদিকে নিহত রাশিদুল ইসলাম রাসু উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙলা ইউনিয়নের ভয়নগর গ্রামের আবু সাইদের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আন্না খাতুনের স্বামী আলাউদ্দিন ২ বছর ধরে বিদেশে থাকেন। স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে তিনি প্রতিবেশী রিকশাচালক সুমনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার ৪/৫ দিন আগে তাদের অবৈধ সম্পর্ক দেখে ফেলে রাজমিস্ত্রি রাশিদুল। আন্না খাতুনের দাবি রাশিদুল তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য ব্লাকমেইল করছিল। না হলে সবকিছু প্রকাশ করার হুমকি দিচ্ছিল। এসব কারণে তারা রাশিদুলকে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সুমন ও আন্না খাতুন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ৩০ মে রাতে রাতে ফোন করে রাশিদুলকে আন্না খাতুনের বাড়িতে ডেকে নেওয়া। ফোন পেয়ে রাশিদুল সেখানে চলে যায়। এ সময় গোয়াল ঘরে ওঁৎপেতে থাকা সুমন তাকে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে। এরপর দুজনে মিলে রাশিদুলের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর গরুর দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মরদেহ বস্তায় ভরে ফেলে। এরপর গভীর রাতে প্রতিবেশী মৃত আব্দুস সালামের পরিত্যক্ত বাড়িতে সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে দেয়।
উল্লাপাড়া থানার ওসি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) দুপুরে তার অর্ধগলিত বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আবু সাইদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা দায়ের করে। এরপর শনিবার (৭ জুন) দুপুরে ঈদের দিন আনা খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর রোববার ভোররাত দেড়টার দিকে উপজেলার বিনায়েকপুর বাজার থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রোববার (৮ জুন) বিকেলে আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবে।
মন্তব্য করুন