কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৫, ১২:২১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

৫ রাজাকারকে দা দিয়ে কোপানো বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা মারা গেছেন  

বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম। ছবি : কালবেলা
বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম। ছবি : কালবেলা

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার নারী মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম (৯৩) মারা গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব নারী সাহসিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম সখিনা বেগম। ১৯৭১ সালে দা দিয়ে কুপিয়ে পাঁচ রাজাকারকে হত্যা করেন তিনি। তার এই সাহসিকতার কথা এখনও স্থানীয়দের মুখে মুখে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোরে বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের বড়মাইপাড়া গ্রামে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

হিলচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল হক নাহিদ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের হাওর-অধ্যুষিত নিকলী উপজেলার গুরুই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সখিনা বেগম। তার বাবার নাম সোনাফর মিয়া এবং মায়ের নাম দুঃখী বিবি। সখিনা নিঃসন্তান। মুক্তিযুদ্ধের আগেই মারা যান স্বামী কিতাব আলী। নিকলীতে সখিনাকে দেখভাল করার কেউ না থাকায় তিনি বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়ার বড়মাইপাড়া গ্রামে ভাগনে ফাইরুন্নেছা আক্তারের কাছে থাকতেন। সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

হিলচিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিয়াজ মামনুন রহমান পুটন জানান, সখিনা বেগম বড়মাইপাড়া গ্রামে প্রায় ৪০ বছর যাবত বসবাস করে আসছেন। মঙ্গলবার ভোর ৫টার সময় তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। আমাদের বাড়ির পাশে তার বসবাস থাকায় ছোটকাল থেকেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলতেন। তিনি খেতাব প্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

নিকলী উপজেলার গুরুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তোতা মিয়া বলেন, গুরুই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগমকে দেখভাল করার জন্য কেউ না থাকায় তিনি বাজিতপুর হিলচিয়া ভাগ্নির কাছে থাকতেন। সেখানে মারা গেছেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার বাদ আসর ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে সখিনা বেগমের গ্রামে শাহী মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সখিনা বেগম নেমে পড়েন সশস্ত্র যুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে সখিনা বেগমের ভাগনে মতিউর রহমান সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে হানাদার পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের হাতে শহীদ হন। ভাগ্নের অকালমৃত্যু সখিনাকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সখিনা বেগম গুরুই এলাকায় বসু বাহিনীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে রাঁধুনির কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে রাজাকারদের গতিবিধির বিভিন্ন খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতেন। একপর্যায়ে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। আসার সময় সেখান থেকে নিয়ে আসেন একটি ধারালো দা। পরে সেই দা দিয়েই নিকলীর পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করেন। সখিনা বেগমের ওই দা বর্তমানে ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘আমার সাথে খেলতে আইসো না’, কাকে হুঙ্কার দিলেন মমতা

নির্বাচকদের নিয়ে ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য লিটনের

শত্রুর বুকে কম্পন ধরাতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল পাকিস্তান

বিচারব্যবস্থায় ডিজিটাল রূপান্তর / সরকার ও ড্যাফোডিলের সহযোগিতায় কোর্ট অটোমেশন সিস্টেম

আরও ১৩ এসপির দপ্তর বদল

শীতকালে পেটে গ্যাস হওয়া থেকে বাঁচতে যেসব সবজি এড়িয়ে চলবেন

‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জনগণকে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করা হবে’

গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, স্বামী আটক

‘বিএনপি সরকারে এলে ব্যাংক ও বীমা খাতে বড় সংস্কার হবে’  

রাজশাহীর নতুন কমিশনার জিল্লুর রহমান

১০

এইচএসসির নির্বাচনী পরীক্ষার ফল কবে, যা জানা গেল

১১

বিয়ে নিয়ে ‘চমক’ দেবেন দেব-রুক্মিণী, চলছে পরিকল্পনা

১২

প্রিপেইড মিটারের ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ যা বলছে

১৩

ডিআইজি পদে একযোগে ৩৩ জনের পদোন্নতি

১৪

আলোচিত ছাত্রদল নেতা হত্যা মামলার আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার

১৫

কানাডায় নেওয়ার কথা বলে নিল ৩৮ লাখ, নিঃস্ব ২ পরিবার

১৬

মার্করামের বিশ্বরেকর্ড, প্রোটিয়াদের কাছে ধবলধোলাই ভারত

১৭

আমার মতো এত বেশি উত্থান-পতন কেউ দেখেনি: জোভান

১৮

বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ 

১৯

সহজ, ঝটপট আর দারুণ মুচমুচে বাঁধাকপির পাকোড়া

২০
X