জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে আগে স্থানীয় নির্বাচন চাই। আমাদের আমাদের নাগরিকরা এমপি-মন্ত্রীর সঙ্গে যতটা না সম্পৃক্ত তার চেয়ে বেশি সম্পৃক্ত স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় নির্বাচনের সঙ্গে। দলের সুবিধার জন্য নয়। আমাদের নাগরিক সুবিধা দেখার জন্য জামায়াত আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবি করেছে। আমাদের এই দাবির সঙ্গে অধিকাংশ দল ইতিমধ্যে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
শনিবার (২১ জুন) বিকাল ৬টার দিকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চান্দপাড়া ঢালী আছিয়া খাতুন আলিম মাদ্রাসার পুরাতন ভবন সংস্কার ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মাসুদ বলেন, আমাদের এমপি দরকার আছে, মন্ত্রী দরকার আছে। আমাদের স্থানীয় প্রশাসন দরকার আছে। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর অধিকাংশ বন্ধ হয়ে আছে। রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামোগত সংস্কারের অভাবে আমাদের নাগরিকরা সুবিধা বঞ্চিত হয়ে আছে।
তিনি বলেন, একটা ফ্যাসিস্ট গেছে, ফ্যাসিস্টদের দোসরা রয়ে গেছে। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য ফ্যাসিস্টদের দোসর মুক্ত একটা বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের অবশ্যই বিচার সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আমরা বিচার চাই, আমরা সংস্কার চাই, আমরা স্থানীয় নির্বাচন চাই। জাতীয় নির্বাচন অবশ্যই হবে। তিনশ’ আসনে অবাধ, সুষ্ঠু, সন্ত্রাসমুক্ত, কালোটাকা মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে ধাপে ধাপে স্থানীয় নির্বাচন হয়ে গেলে আমাদের সরকারের সক্ষমতা বোঝার সুযোগ হতো।
উপস্থিত সকলের কাছে নিজ নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে জামায়াত নেতা মাসুদ বলেন, ইতোপূর্বে আপনারা অনেককে আপনাদের পবিত্র আমানত ভোট দিয়েছেন এবং কি পেয়েছেন কি পাননি আমি সে হিসেবে আমি যেতে চাই না। আমি আপনাদের সন্তান হিসেবে ৪৬টি বছর আপনাদের পাশে অবস্থান করেছি। সবার উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, সামনের দিকে আপনাদের পাশে থাকার জন্য আমি কি একটা ভোট আপনাদের কাছে ভিক্ষা চাইতে পারি না?
এ সময় উপস্থিত সকলের হ্যাঁ সূচক জবাবে ড. মাসুদ বলেন, তাহলে এই বাংলাদেশে এবার বাউফল থেকে আপনাদের এই মদনপুরার (নিজ গ্রাম) ছেলেটাকেই কেবল বিজয় করা হবে না, এবার বিজয় করা হবে সততা, নৈতিকতা, দক্ষতা অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক সৈনিককে। আমি বলেছি, বাউফলে কোনো ব্যক্তি এবার এমপি হবে না। এবার এমপি হবে বাউফলের সাড়ে ৪ লাখ মানুষ। এমপি হবেন এই সাড়ে চার লাখ মানুষের একজন খাদেম। আমি আপনাদের পাশে থাকব। আপনারা পাশে থাকবেন কি না তা আল্লাহর ওপর সোপর্দ করলাম।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে কেবল শেখ হাসিনার পতন হয়নি। শুধু আওয়ামী লীগের পতন হয়নি। একটি আধিপত্যবাদী শক্তির পতন ঘটিয়েছি আমরা। আমরা বলেছি বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত অন্য কোনো দেশ থেকে হতে পারে না। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণের মধ্য থেকে হতে হবে। বাংলাদেশের মাটিতে হতে হবে। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ভূমিকা পালনকারী সকল দল এবং মতের সঙ্গে আলোচনা করে হতে হবে। কোন একটা দল বা কোন একজন ব্যক্তিকে খুশি করে অন্তর্বর্তী সরকার বা নির্বাচন কমিশন কাজ করলে তারা কেবল তাদের নিরপেক্ষতাই হারাবেন তা শুধু না, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন। আমরা চাই আমরা সবাই মিলে এ দেশটাকে গড়ে তুলব।
মদনপুরা ইউপির ঢালী আছিয়া খাতুন আলিম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এসময় জামায়াতে ইসলামীর বাউফল উপজেলা আমির মাওলানা মো. ইসহাক মিয়া, সাবেক উপজেলা আমির মাওলানা মু. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক খালিদুর রহমান, মাওলানা আব্দুস সাত্তার, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হালিম, বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. জলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট মুনতাসির মুজাহিদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের বাউফল উপজেলা শাখার সভাপতি মো. লিমন হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন