সাইলেন্ট কিলার খ্যাত গাছ পার্থেনিয়ামে সংস্পর্শে হতে পারে নানা রোগ। দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বিষাক্ত আগাছা পার্থেনিয়াম। ব্যাহত হতে পারে ফসলের উৎপাদন। যা ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
দেখতে ধনেপাতা গাছের মতো। উচ্চতা দুই থেকে তিন ফুট। সবুজ পাতার ফাঁকে সাদা ফুলে আকর্ষণীয়, এই আগাছার নাম পার্থেনিয়াম। নাটোরসহ দেশের মাঠে-ঘাটে ছড়িয়ে পড়েছে এই ঝোপালো গাছ।
কৃষিবিদ ও চিকিৎকরা বলেছেন, পার্থেনিয়াম এক ধরনের বিষাক্ত আগাছা। বিষাক্ত এই আগাছার বিস্তার রোধে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে কৃষি, কৃষক, গবাধিপশু ও মানবদেহের জন্য হয়ে উঠবে ভয়ঙ্কর। নীরবে ক্ষতি করলেও জানে না বেশিরভাগ মানুষ।
নাটোরের পতিত জমি থেকে শুরু করে কৃষি জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত পার্থেনিয়াম গাছ। কয়েক বছর ধরে এ বিষাক্ত উদ্ভিদটির বিস্তার নাটোর বেড়েই চলেছে। যা তা রোধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দেখতে অনেকটা প্রাপ্তবয়স্ক ধনেপাতা গাছের মতো ছোট সাদা ফুল ও চিকন পাতা এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। কোনোরকম যত্ন ছাড়াই এ আগাছা বাড়তে থাকে এবং প্রতিকুল পরিবেশে এ আগাছা বেঁচে থাকতে সক্ষম বলে জানা গেছে। উঁচু এবং নিচু সব ধরনের মাটিতেই জন্মায় এ উদ্ভিদ।
নাটোরের বিভিন্ন ইউনিয়নে অধিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে পার্থেনিয়াম গাছ। রেললাইন ও রাস্তার ধারেও দেখা মিলছে বিষাক্ত উদ্ভিদটির।
কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালে এই এলাকায় পার্থেনিয়ামের পরিমাণ কম ছিল। তবে পার্থেনিয়াম নিধনে কৃষকদের নানা পরার্মশ দিচ্ছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনের দেখা যায়, বিষাক্ত এ আগাছাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। ফসলের ক্ষেতে একবার হয়ে গেলে তা নিধন করা খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। কৃষি জমিতে যে কোনো ফসল ফলাতে গেলে কৃষকরা এ বিষাক্ত আগাছাটির সম্মুক্ষীণ হচ্ছেন। যত নিধন করা হয় পুনরায় ফসলের চারা গজানোর সঙ্গে পার্থেনিয়ামের চারাও বেড়ে ওঠে। তাই পার্থেনিয়াম থেকে কৃষি জমি রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন কিছু সচেতনতা ও কয়েকটি পদক্ষেপ। তা নাহলে ফসলের উন্নয়ন ব্যাহত হতে পারে।
মাধনগর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র উপসহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আহসান হাবীব, নলডাঙ্গা উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. খন্দকার সাগর আহম্মেদ, নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, দেখতে অনেকটা প্রাপ্তবয়স্ক ধনেগাছের মতো ছোট সাদা ফুল ও চিকন পাতা এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। কোনোরকম যত্ন ছাড়াই এ আগাছা বাড়তে থাকে এবং প্রতিকূল পরিবেশে এ আগাছা বেঁচে থাকতে সক্ষম বলে জানা গেছে। উঁচু এবং নিচু সব ধরনের মাটিতেই জন্মায় এ উদ্ভিদ। পার্থেনিয়ামের বীজ খুবই ক্ষুদ্র ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্নভাবে। গরুর গোবর, সেচসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন জায়গায়। গবাদি পশু চরানোর সময় গায়ে লাগলে পশুর শরীর ফুলে যাওয়া, তীব্র জ্বর, বদহজমসহ নানা রোগে আক্রান্ত আর পশুর পেটে গেলে বিষক্রিয়া হতে পারে। এ ছাড়া কেবল পশুই নয়, আগাছাটি মানুষের হাতে পায়ে লাগলে চুলকে লাল হয়ে ফুলে যাওয়া এমনকি ত্বকের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত মানুষটির ঘন ঘন জ্বর, অসহ্য মাথা ব্যথাসহ নানা রোগে হতে পারে। পার্থেনিয়াম একটি মারাত্মক ও বিষাক্ত আগাছা। এখনই উচিত সতর্ক হওয়া যেসব জায়গায় পার্থেনিয়াম গাছ দেখা যাবে সেখানে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা মাধ্যমে কৃষকদের অবহিত করতে হবে এবং দেখা মাত্রই আগাছা নিধন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মন্তব্য করুন