কক্সবাজারের টেকনাফে বন বিভাগের পাহারা দলের নিখোঁজ দুই সদস্যের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। অপর সদস্যের পরিবারের সঙ্গে এখনও কেউ যোগাযোগ করেনি। এতে ধারণা করা হচ্ছে তারা অপহৃত হয়েছেন।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে অপহরণকারীরা মো. শাকেরের মায়ের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ২০ লাখ টাকা এবং আবদুর রহিমের বাড়িতে তার রেখে যাওয়া মোবাইল ফোনে কল দিয়ে একই অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানা গেছে। অপর নিখোঁজ আবদুর রহমানের আত্মীয়স্বজনের কাছে এখনও মুক্তিপণ দাবি করা হয়নি।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) ন্যাচার পার্কের বন পাহারা দিতে গিয়ে ওই তিনজন নিখোঁজ হন। তাদের খুঁজতে বন বিভাগ ও স্থানীয়রা বিকেলে পাহাড়ে অভিযান চালান।
নিখোঁজ তিনজন হলেন টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়ার এলাকায় বাসিন্দা ও সিপিজি বন পাহারা দলের সদস্য মোহাম্মদ শাকের (২৪), আব্দুর রহিম (৩৭) ও আব্দুর রহমান (৩২)। তারা তিনজনই বন পাহারা দলের সদস্য।
কোথাও খোঁজখবর না পেয়ে রাতেই টেকনাফ মডেল থানায় মোহাম্মদ শাকেরের বাবা আবদুল মালেক বাদী হয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন।
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তাদের উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনি বিটের নেচার পার্ক বনে পাহারা দেওয়ার কথা ছিল। পাহারা দিতে গিয়ে তিনজন নিখোঁজ হন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নেচারপার্ক মোচনি বন পাহারা দলের সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান।
নিখোঁজ তিনজনের পরিবার সূত্র জানায়, শুক্রবার সকালে বন পাহারা দেওয়ার জন্য মোহাম্মদ শাকের, আব্দুর রহিম ও আব্দুর রহমান তারা তিনজন বনের ভেতর যান। কিন্তু তারা বেলা ১১টার দিকে ফেরত আসার কথা থাকলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি এবং তাদের হাতে থাকা মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। এতে করে পরিবারের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
পরে আজ শনিবার সকালে দুবৃত্তরা মোবাইল ফোনে মুক্তিপণ দাবি করে। না দিলে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দেয়। এ সময় তাদের শারীরিক নির্যাতনের চিৎকার শুনান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বন বিভাগের টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘উপজেলার হ্নীলার মোচনি বিটের আওতাধীন বন পাহারা দলের পিসিজি ৩৭ জন সদস্য রয়েছেন। এ পাহারা দলের সদস্যরা সকাল ও বিকেল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বনে পাহারা দেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কোনো ধরনের খোঁজখবর না পেয়ে বন বিভাগের অপরাপর সদস্য ও বনকর্মীদের নিয়ে বিকেলে পাহাড়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।’
টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) মোহাম্মদ জুবাইর সৈয়দ বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশ কাজ করছে।’
এদিকে টেকনাফ মোচনি বিটের (ফরেস্টার) অফিসার আবুল কালাম সরকার বলেন, ‘পুলিশ ও স্থানীয় মেম্বার মোহাম্মদ আলম, শতাধিক স্থানীয় লোকজন ও বন পাহারা দেলর অর্ধশতাধিক সদস্যদের নিয়ে পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।’
মন্তব্য করুন