কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার ঘটনায় ৫ জনকে আদালতে তোলা হয়। রোববার (৬ জুলাই) তাদের কুমিল্লা আদালতে তোলা হয়। কুমিল্লা ৫ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্দিক আজাদ তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠান।
এদিকে গ্রেপ্তার বাচ্চু মেম্বার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তাকেও আদালতে তোলা হয়। তার বক্তব্য রেকর্ড করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বক্তব্য গ্রহণ শেষে তাকেও জেল পাঠানো হবে।
কোর্ট পরিদর্শক পুলিশ ইন্সপেক্টর সাদেকুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাচ্চু মেম্বারের বিরুদ্ধে পুরো ঘটনা সংগঠিত করাসহ প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মোবাইল চুরির ঘটনা ও পরবর্তীতে অভিযুক্তের বাবার থানায় করা অভিযোগ নিয়েই ক্ষোভ সৃষ্টির সূত্র ধরেই পরবর্তীতে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে এ ঘটনায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। তিনি জানান, মামলার এজাহারনামীয় আসামি বাচ্চু মিয়া ওরফে বাচ্চু মেম্বার, রবিউল আওয়াল (৫৫) ও দুলাল (৪৫) ছাড়াও আতিকুর রহমান (৪২), বায়েজ মাস্টার (৪৩) ও আকাশকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানী ও কুমিল্লায় একাধিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তার আগে শনিবার (৫ জুলাই) ভোরে এজাহারভুক্ত বাবুল মিয়া (৫০) ও ছবির মিয়াকে (৪৫) কুমিল্লায় গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। তারাও জেলহাজতে রয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে। এরপর থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত আর কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল সাড়ে আটটা থেকে নয়টার মধ্যে মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার আকুবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ী গ্রামে রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তার ছেলে মো. রাসেল মিয়া (৩৫) এবং মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকিকে (২৯) পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া সেখানে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭) বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় নিহত রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে শনিবার বাঙ্গরা বাজার থানায় বাচ্চু মিয়াসহ ৩৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান কালবেলাকে জানান, এ পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা গেছে। অভিযান চলছে। বাকিদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
মন্তব্য করুন